ব্যারাকপুর, 30 অক্টোবর: তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে টিটাগড়ে শাসকদলের এক কর্মীর খুন হওয়ার ঘটনায় খড়দা থানার আইসি-র সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ে জড়িয়েছেন তৃণমূল কাউন্সিলর সোনু সাউ । সেই ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে । সেই ভিডিয়োতে খড়দা থানার আইসি রাজকুমার সরকারকে দেখা যাচ্ছে রীতিমতো আঙুল উঁচিয়ে তিনি ধমক দিচ্ছেন টিটাগড় পৌরসভার 15 নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সোনু সাউকে । এমনকি জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাঁর দায়িত্ব এবং কর্তব্যও মনে করিয়ে দিয়েছেন আইসি। যা ঘিরেই এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজনীতির অন্দরে । খড়দা থানার আইসি-র ভূমিকার প্রশংসা করে নাম না করে দলীয় কাউন্সিলরের সমালোচনা করেছেন ব্যারাকপুরের সাংসদ তথা তৃণমূল নেতা অর্জুন সিং। আইসির ভূমিকার প্রশংসা করেও এই ইস্যুতে শাসকদলকে কটাক্ষ করতে ভোলেননি বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তাপস মিত্র ।
ঘটনার সূত্রপাত ভাড়াটিয়ার ঘরে তালা মারাকে কেন্দ্র করে । যার জেরে সংঘর্ষ বাঁধে শাসকদলের দুই কাউন্সিলর সোনু সাউ এবং বিকাশ সিংয়ের অনুগামীদের মধ্যে। সেই সংঘর্ষের মাঝে পড়ে প্রাণ যায় আকাশ প্রসাদ নামে এক তৃণমূল কর্মীর । এরপরই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে টিটাগড় পৌরসভার পুরানি বাজার এলাকা । পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে তৃণমূল কাউন্সিলর সোনু সাউয়ের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন খড়দা থানার আইসি রাজকুমার সরকার । প্রকাশ্য রাস্তায় কাউন্সিলরকে ধমক দিয়ে আইসি বলেন,'তুমি তালা মারার কে ? যদি কেউ ক্রাইম করে থাকে তুমি অভিযোগ করবে ? তা না করে রংবাজি করছ,আবার তালাও মারছ ! লোকের বাড়ি তালা মারাটাকে কী বলে ? জনপ্রতিনিধির এটা কাজ নয় !"এরই মাঝে কাউন্সিলর সোনু সাউ পাল্টা আইসি-র উদ্দেশ্যে বলতে থাকেন,"আপনি এসে আমাকে ধমকাবেন । এটা ঠিক নয় । আমরাও তৃণমূল দলটা করি ৷"
এর প্রত্তুতরে আইসি চিৎকার করে কাউন্সিলরকে বলেন,"আপনার কথা শোনার জন্য আমি বসে নেই । তোমার মতো আমার 44 জন কাউন্সিলর রয়েছে । তাই আমাকে ধমকিয়ে কোনও লাভ নেই । কাউন্সিলর হয়ে তোমরা দু'জনে মারপিট করছো, নির্লজ্জের মতো । তোমরা পাবলিক রিপ্রেজেন্টটিভ । তোমরা গুন্ডা নয় । অথচ আজকে তোমরা যে আচরণ করলে সেটা গুন্ডাদের থেকে কম নয় ৷ " আইনশৃঙ্খলা নিয়েও পালটা কাউন্সিলরকে পাঠ দিতে দেখা যায় খড়দা থানার আইসি-কে। এমনকী নির্বাচনের আগে দুই কাউন্সিলরের মতভেদ বসে মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শও দিতে দেখা গিয়েছে আইসি রাজকুমার সরকারকে । আর দাবাং আইসি-র এই ভূমিকা ছুঁয়ে গিয়েছে শাসক এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের । প্রশংসায় ভরিয়ে দেওয়া হয়েছে আইসি রাজকুমার সরকারকেও ।