দত্তপুকুর, 25 সেপ্টেম্বর: দত্তপুকুর বিস্ফোরণকাণ্ডে অবশেষে পুলিশের জালে অন্যতম অভিযুক্ত রমজান আলি । ঘটনার প্রায় একমাসের মাথায় সোমবার তার নাগাল পেল পুলিশ । সূত্র মারফত খবর পেয়ে দত্তপুকুরের কদম্বগাছি এলাকা থেকে রমজান আলিকে হাতেনাতে ধরা হয় । পুলিশের দাবি, ঘটনার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছিলেন বিস্ফোরণকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত । টাওয়ার লোকেশন যাতে না পাওয়া যায় সেই কারণে রমজান তাঁর মোবাইল ফোনটিও সুইচড অফ করে রেখেছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ । ফলে অভিযুক্ত রমজানের গতিবিধি পেতে কালঘাম ছুটছিল তদন্তকারী অফিসারদের । শেষ পর্যন্ত নির্দিষ্ট সূত্র মারফত খবরের ভিত্তিতে পলাতক অভিযুক্ত রমজান আলিকে ধরতে সমর্থ হয় দত্তপুকুর থানার পুলিশ । সোমবার দুপুরে ধৃত রমজান আলিকে বারাসত আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে 10 দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন ।
গত 27 অগস্ট দত্তপুকুরের ইছাপুর-নীলগঞ্জ পঞ্চায়েতের মোচপোল গ্রামে বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে । বিস্ফোরণের তীব্রতায় লন্ডভন্ড হয়ে যায় গোটা কারখানাটি । ঘটনায় কারখানার মালিক-সহ মোট ন'জনের মৃত্যু হয় ।আহত হন অনেকে । বিস্ফোরণের জেরে মৃতদেহের হাত, পা, মাথা এদিক-ওদিক ছিটকে যায় । ফলে দেহ শনাক্ত করতে গিয়েও হিমশিম খেতে হয় পরিবারের লোকজনকে । বিস্ফোরণের ভয়াবহতা নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা রাজ্যকে । অনেকে দত্তপুকুরের এই বিস্ফোরণের ঘটনার সঙ্গে এগরার বাজি বিস্ফোরণের ঘটনার মিলও খুঁজে পেয়েছিলেন । ঘটনার পর শাসক-বিরোধী নেতা-মন্ত্রীদের ভিড়, রাজনৈতিক তরজায় রীতিমতো সরগরম হয়ে উঠেছিল মোচপোল এলাকা ।
কিন্তু এতকিছুর পরও বিস্ফোরণকাণ্ডে পুলিশের সাফল্য বলতে সফিকুল ইসলাম নামে একজনকে গ্রেফতার করা । তারপর আর এই ঘটনায় আর কোনও অভিযুক্তকেই পুলিশ ধরতে পারেনি । ফলে প্রথম থেকেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল । যদিও সেই সময় পুলিশ দাবি করেছিল এফআইআরে নাম থাকা চার অভিযুক্তের মধ্যে দু'জনই মারা গিয়েছিল বাজি বিস্ফোরণে । বাকি দুই পলাতক অভিযুক্তের মধ্যে একজন গ্রেফতার হয়েছিল আগেই । এদিন গ্রেফতার হল বাকি আরও একজন । তবে, পুলিশের এই দাবি মানতে নারাজ স্থানীয়রা । তাঁদের অভিযোগ, এই বিস্ফোরণের ঘটনায় একাধিক লোকের যোগ রয়েছে । তাদের ধরার দাবিতে বহুবার পথেও নেমেছে স্থানীয় বাসিন্দারা । না সত্ত্বেও পুলিশ মাথাদের না ধরে বেছে বেছে চুনোপুটিদের গ্রেফতার করছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীদের । ফলে এই ঘটনায় পারদ ক্রমশ চড়ছে ।