বারাসত , 19 মার্চ : আগামী দিনে তাঁরাই রোগীর সেবায় নিয়োজিত হবেন । অথচ,তাঁরা কোনও কারণে আক্রন্ত হলে তার জন্য নেই কোনও রকম সুরক্ষার ব্যবস্থা । কোরোনা আতঙ্কে খোদ মুখ্যমন্ত্রী যখন হাসপাতালের চিকিৎসক নার্স ও কর্মীদের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানাচ্ছেন,তখন বারাসত জেলা হাসপাতালের নার্সিং ট্রেনিং স্কুলের পড়ুয়াদেরই কোরোনা সতর্কতায় ন্যূনতম সুরক্ষার ব্যবস্থাটুকু করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে । এই অভিযোগের ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাল বারাসত জেলা হাসপাতালের নার্সিং ট্রেনিং স্কুলের পড়ুয়া এবং আবাসিকরা । শুধু তাই নয়,দ্রুত সুরক্ষার ব্যবস্থা করা না হলে আগামীতে কাজে যোগ দেবেন না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা । এনিয়ে অবশ্য নার্সিং ট্রেনিং স্কুল কর্তৃপক্ষ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একে অপরের ঘাড়ে দোষ চাপিয়েছেন । আর এই দড়ি টানাটানির মধ্যেই আতঙ্কে রয়েছেন ওই নার্সিং ট্রেনিং স্কুলের পড়ুয়ারা ।
বারাসত জেলা হাসপাতালের পাশেই রয়েছে নার্সিং ট্রেনিং স্কুল ও আবাসিকদের থাকার হোস্টেল । সেখানে থেকেই অনেকে নার্সিং ট্রেনিংয়ের পড়াশোনা করেন । হাসপাতালে গিয়ে হাতেকলমে কাজও শেখেন তাঁরা ৷ অথচ হাসপাতালের নার্সিং ট্রেনিং স্কুলের পড়ুয়ারাই কোরোনা প্রতিরোধের জন্য নির্দিষ্ট পোশাক,মাস্ক,স্যানিটাইজার পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ । প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজে যোগ দিতে হচ্ছে তাঁদের । এমনই অভিযোগ তুলে আজ বিকালে নার্সিং ট্রেনিং স্কুলে বিক্ষোভ দেখান প্রায় কয়েকশো পড়ুয়া । ক্ষোভ উগরে দেন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও ।
এই বিষয়ে, পৌলমি সরকার নামে এক পড়ুয়া বলেন," স্যানিটাইজ়ার ও মাস্ক ছাড়াই কাজে যোগ দিতে হচ্ছে আমাদের । কর্তৃপক্ষকে বললেই তাঁরা বলছে সাপ্লাই নেই । পাওয়া যাচ্ছে না ইত্যাদি ইত্যাদি ।" পৌলমী অভিযোগের সুর তুলে আরও জানালেন , "পড়ুয়ারা কর্তৃপক্ষকে তাঁদের অভাব অভিযোগ জানালে তাঁরা আমাদের এই বলে সান্ত্বনা দিচ্ছেন যে কোরোনা ভাইরাস এভাবে ছড়ায় না । পুরোপুরি বিভ্রান্ত করে, অন্যভাবে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে আমাদের ৷" পৌলমীর কথায়,"আমরা এই পেশার সঙ্গে যখন যুক্ত হয়েছি,তখন আমরা রোগীর সেবা করতে প্রস্তুত । কিন্তু,তার আগে আমাদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে । তা না হলে আমরা কাজে যোগ দেবনা"। একই সুর শোনা গিয়েছে অপর পড়ুয়া রিনা নস্করের গলাতেও । সে বলে,"কোরোনা ইস্যু ছোটোখাট বিষয় নয় । সবাই মন্দির,মসজিদ সহ ধর্মীয় স্থান বন্ধ করার কথা বলছে । কিন্তু,আমাদের সুরক্ষার কথা কেউ বলছে না । আমরাও রক্ত মাংসে গড়া মানুষ । আজকে আমাদের কিছু হয়ে গেলে তার দায় কে নেবে । আমাদের জীবন সুরক্ষিত করতে হবে । সেই আশ্বাস পাওয়ার পরই আমরা কাজে যোগ দেব ।
নিজেদের সুরক্ষা পাওয়ার দাবিতে কী বললেন পড়ুয়ারা ? দেখুন ভিডিয়োয়... এদিকে, বিষয়টি নিয়ে ওই নার্সিং ট্রেনিং স্কুলের প্রিন্সিপাল ছন্দা মান্ডি হেমব্রম বলেন,"আজই স্কুলের পড়ুয়াদের কাছ থেকে সমস্যার কথা জানতে পারি । উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করব" । অন্যদিকে, এবিষয়ে বারাসত জেলা হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন,"যারা বিক্ষোভ দেখিয়েছে তাঁরা কেউই হাসপাতালের স্টাফ নন । সকলেই পড়ুয়া । বিষয়টি নিয়ে নার্সিং ট্রেনিং স্কুলের প্রিন্সিপাল জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকের সাথে আলোচনা করেছেন । আশা করি,শীঘ্রই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে ।"