বনগাঁ, 16 জুন : বনগাঁ পৌরসভায় রদ বদল ৷ পৌর প্রশাসক শংকর আঢ্যকে সরিয়ে সেই পদে বসানো হল তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠকে । মঙ্গলবার এ বিষয়ে সরকারি নির্দেশিকা প্রকাশিত হয়েছে । এ দিন ইমেল মারফত সে খবর জানানো হয় গোপাল বাবুকে ।
2020 সালের মে মাসে বনগাঁ পৌরসভার মেয়াদ শেষ হয়েছিল । বসানো হয় প্রশাসক । সেই সময় প্রশাসকের চেয়ারে বসেছিলেন পৌরসভার চেয়ারম্যান শংকর আঢ্য । এত দিন তিনিই প্রশাসকের কাজ সামলাচ্ছিলেন । সূত্রের খবর, বিধানসভা ভোটে বনগাঁয় তৃণমূলের ভরাডুবির জন্য দলের একাংশ শংকর আঢ্যের ভাবমূর্তিকেই দায়ি করেছিলেন । প্রশাসনিক পদ থেকে তাঁকে সরানোর জন্য উচ্চ নেতৃত্বের কাছে আবেদনও জানানো হয়েছিল তৃণমূলের এক অংশের থেকে । তারপর থেকেই বনগাঁ পৌরসভার প্রসাশক বদল নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছিল । সেই প্রক্রিয়াই বাস্তবায়িত হয় মঙ্গলবার ।
গোপাল শেঠ দীর্ঘদিন উত্তর 24 পরগনার তৃণমূল কংগ্রেসের আহ্বায়ক পদ সামলাচ্ছেন । নতুন করে তাঁকে বনগাঁ পৌরসভার প্রশাসনিক দায়িত্বে বসানো হল । এতে স্বাভাবিকভাবেই খুশি গোপাল বাবু ৷ তিনি সকলকে নিয়ে কাজ করার কথা বলেন ৷
গোপাল শেঠ বলেন, "বনগাঁ পৌরসভার পৌরভোটে প্রশাসক হিসেবে কাজ করার জন্য, আমার কাছে একটি সরকারি চিঠি এসেছে । দু-একদিনের মধ্যে দায়িত্ব নেব । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উন্নয়নে গতি আনার জন্য স্বচ্ছতা বজায় রেখেছে, সবাইকে নিয়ে আমরা কাজ করে যাব ।"
অন্যদিকে শংকর আঢ্য জানান, তাঁকে কেন সেই পদ থেকে সরানো হয়েছে, তা তিনি জানেন না ৷ শংকরের কথায়, তিনি পৌরসভার কী উন্নয়ন করেছেন, তা বনগাঁর সাধারণ মানুষ জানেন ৷ যে বনগাঁ বিধানসভায় তৃণমূলের হারার জন্য যদি দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বরা যদি তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে থাকে, তাহলে তাঁর সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে বলেই মনে করেন শংকর ।
বিজেপি নেতা দেবদাস মণ্ডল অবশ্য বলেন, "বনগাঁ পৌর প্রশাসক শংকর আঢ্যর দ্বারা দীর্ঘ দিন ধরে পৌর নাগরিকরা অত্যাচারিত হচ্ছিল । মানুষ ভয়ে আতঙ্কে পৌরসভায় যেতে পারত না । আমরা এর বিরুদ্ধে অনেক আন্দোলন করেছি । নতুন যিনি দায়িত্ব নিচ্ছেন, তাঁকে অনুরোধ করব মানুষের জন্য কাজ করার জন্য ।"
প্রসঙ্গত, 2015 সালের পৌর নির্বাচনে বনগাঁর 22 টি ওয়ার্ডের মধ্যে 21 টিতে তৃণমূল জয়লাভ করেছিল ৷ 1 নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী হয়ে চেয়ারম্যান হয়েছিলেন শংকর বাবু । 2019 এর জুন মাসে দলের 14 জন বিধায়ক তাঁর বিরুদ্ধে স্বৈরাচার ও স্বজনপোষণের অভিযোগ এনে অনাস্থা এনেছিল । শংকর বাবুকে সরিয়ে দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছিলেন জেলা নেতৃত্বের কাছে ৷ পরবর্তী কালে কয়েকজন বিধায়ক শংকর আঢ্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন ।