হাবড়া, 20 জুন : ঘূর্ণিঝড় আমফানে বিপর্যস্ত জনজীবন । বিপর্যস্ত পাখিরাও । গাছের সঙ্গে ভেঙেছে তাদের বাসাও। সেই গৃহহীন পাখিদের আশ্রয় দিতে উদ্যোগী উত্তর 24 পরগনার হাবড়া থানার টুনিঘাটা গ্রামের একদল যুবক-যুবতি । তারা জঙ্গলে ঘুরে ঘুরে পাখিদের জন্য কৃত্রিম বাসা বেঁধে দিচ্ছে ।
20 মে বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় আমফানে রাজ্যের 14টি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । উত্তর 24 পরগনার 22টি ব্লকের মধ্যে হাবড়াতেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে । হাবড়ার খাড়ো, রুদ্রপুর, কাশীপুর, কুমড়া, ফুলতলা ও সংহতি-সহ বিভিন্ন গ্রামের বাড়িঘর, গাছপালা তছনছ হয়ে গিয়েছে । মানুষ তো গৃহহীন হয়েছেই । সঙ্গে গৃহহীন হয়েছে পাখিরাও । ঝড়ের দাপটে নষ্ট হয়েছে বহু পাখির বাসা । পাখি মারাও পড়েছে অসংখ্য । গৃহহীন পাখিদের আশ্রয় দিতে উদ্যোগী হলেন হাবড়ার কুমড়া, কাশীপুর ও টুনিঘাটা এলাকার সমীরণ কাঞ্জিলাল, সঞ্জীব কাঞ্জিলাল, সজল মালাকার, রুমা মণ্ডল-সহ একদল যুবক-যুবতি । তারা জঙ্গল ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন গাছে কৃত্রিম বাসা বেঁধে দিচ্ছে । ওই যুবক-যুবতিরা পাখির বাসা তৈরি করার জন্য কিনেছেন ছোটো ছোটো মাটির ভাঁড় । সেগুলোকে ছিদ্র করে উপরটা আর একটা সরা দিয়ে ঢেকে দিচ্ছেন । ভাঁড়ের ভিতরে পাখিদের আরামদায়ক বিছানা তৈরির জন্য বিচালির টুকরোও ভরে দিচ্ছেন । শুধু তা-ই নয়, কাগজের কাপে করে পাখিদের খাবারও ওই বাসার মধ্যে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে । ওই যুবকরা সকাল হলেই মই আর মাটির ভাঁড়ের তৈরি পাখির বাসা নিয়ে ফুলতলা, সংহতি, কুমড়া, রুদ্রপুর ও টুনিঘাটার জঙ্গলে জঙ্গলে ঘুরছেন । গাছে গাছে বেঁধে দিচ্ছেন কৃত্রিম ওই পাখির বাসা ।
হাবড়া শ্রীচৈতন্য কলেজের ছাত্রী রুমা মণ্ডল বলেন, "আমফান ঘূর্ণিঝড়ে শুধু মানুষই ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি । ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাখিরাও। গাছ ভেঙে পড়েছে। তাহলে পাখির বাসা কি আর থাকে? সেই পাখিদের আমরা ফিরিয়ে আনতে চাই । তাই গাছে গাছে আমরা কৃত্রিম পাখির বাসা বেঁধে দিচ্ছি ।"