মিনাখাঁ, 20 ফেব্রুয়ারি : শারীরিক অক্ষমতাকে পিছনে ফেলে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে মিনাখাঁর মনিরা খাতুন ৷ মনিরার উচ্চতা মাত্র দু’ফুট ৷ শুয়ে শুয়েই পড়াশোনা এবং পরীক্ষা দেওয়া ৷ তার জন্য আলাদাভাবে পরীক্ষার ব্যবস্থাও করেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ৷
উচ্চতা দু’ফুট, শুয়েই মাধ্যমিক পরীক্ষা - north 24 paraganas
শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে দু’ফুট উচ্চতার মনিরা ৷ মিনাখাঁর মালিয়াড়ি গ্রামের বাসিন্দা মনিরা ও তার ভাই 90 শতাংশ প্রতিবন্ধী ৷ তাদের সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ৷
মনের জোর বড় জোড় ৷ মনের শক্তির উপর ভর করে মানুষ ভয়কেও জয় করে ৷ উত্তর 24 পরগনার বসিরহাট মহকুমার মিনাখাঁ ব্লকের মালিয়াড়ি গ্রামের মিনার খাতুন ৷ এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সে ৷ হত দরিদ্র বাবা-মায়ের সব আশা-ভরসা মনিরাকে ঘিরে ৷ মেয়ে পড়াশোনা করে ভালো চাকরি করবে, পরিবারের আর্থিক উন্নতি হবে ৷ বাবা-মায়ের চোখের জল মুছবে ৷ কিন্তু বিধি বাম ৷ শারীরিকভাবে প্রায় 90 শতাংশ প্রতিবন্ধী মনিরা ৷ তার উচ্চতা মাত্র দু’ফুট ৷ ছোট থেকে শুয়েই পড়াশোনা করেছে ৷ অদম্য জেদ আর প্রবল মানসিক শক্তি তাকে পিছনের সারিতে ফেলে রাখতে পারেনি ৷ পেশায় ভ্যানচালক বাবা মোক্তার আলি আর মাকে চোখের সামনে দারিদ্রর সঙ্গে লড়াই করতে দেখেছে ৷ ভাঙা বেড়ার ঘরের ফাঁক দিয়ে স্বপ্নকে বাস্তব হতে দেখেছে মনিরা ৷ বলা ভালো, বাস্তবে পরিণত করেছে ৷ এবছর ধুতুরদহ কল্যাণ পরিষদ স্কুল থেকে মাধ্যমিক দিচ্ছে সে ৷ পরীক্ষার দিনগুলিতে মা ভ্যানে করে কেন্দ্রে দিয়ে আসেন মনিরাকে ৷ বামনপুকুরিয়া এসএমএম হাইস্কুলে পড়েছে তার পরীক্ষা কেন্দ্র ৷ পরীক্ষা দিতে পেরে খুব খুশি মনিরা ৷
নুন আনতে পান্তা ফুরানোর সংসারে মোক্তার আলির ছেলেও মেয়ের মতোই প্রতিবন্ধী ৷ আশিকুল এখন ক্লাস ফাইভে পড়ে ৷ তারও দু’চোখ ভরা স্বপ্ন ৷ দিদিকে দেখে ভাইও জীবনে কিছু করে দেখাতে চায় ৷ মিনাখাঁ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গোপেশচন্দ্র পাত্র মনিরা ও তার ভাইকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন ৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা সবরকমভাবেই মনিরার পাশে আছি ৷ ভবিষ্যতে যাতে সে বড় হয়, তার জন্য সরকারিভাবে সবরকম সাহায্য করা হবে ৷’’ আর পাঁচজনের মতো তার লড়াই নয় ৷ তা বিলক্ষণ জানে মনিরা ৷ কিন্তু হেরে যেতে শেখেনি সে ৷