মালদা, 6 নভেম্বর : সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণার চক্র চালানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার যুবক । অভিযুক্তের নাম রাকেশ বেরা । চক্রের সঙ্গে জড়িত বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে মালদা সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ ।
বিষয়টি সাইবার থানার নজরে আসে 12 অক্টোবর । মালদার মিরচক এলাকার বাসিন্দা পায়েল কুণ্ডু ৷ গত 12 অক্টোবর মালদা সাইবার ক্রাইম থানায় একটি প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন ৷ অভিযোগপত্রে তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে সরকারি চাকরির চেষ্টা করছিলেন তিনি ৷ কিন্তু চাকরি পাচ্ছিলেন না৷ সম্প্রতি সুভাষপল্লি এলাকার পূর্ব পরিচিত এক মহিলা মৌমিতা মজুমদার তাঁকে জানান, তার সঙ্গে স্বাস্থ্য দপ্তরের ভালো যোগাযোগ রয়েছে ৷ সেখানে পায়েলের চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে পারবেন৷ সেই সূত্রেই পায়েলের সঙ্গে রাকেশ বেরা ও তার স্ত্রী সোনালি রায় বেরার পরিচয় করিয়ে দেয় মৌমিতা । রাকেশ জন্মসূত্রে শিলিগুড়ির বাসিন্দা । থাকত মালদার বিধানপল্লিতে । রাকেশের স্ত্রী সোনালির বাবার বাড়ি মালদার হরিশচন্দ্রপুরের মধ্যপাড়ায় ।
পায়েলের অভিযোগ, চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে পায়েলের কাছে 12 লাখ টাকা দাবি করে অভিযুক্তরা । যদিও পরে সেই টাকার অঙ্ক দাড়ায় 11 লাখ টাকায় । এরপরই একাধিক ধাপে নগদ ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে রাকেশকে আড়াই লাখ টাকা দেয় পায়েল ৷ তারপরই 18 অগাস্ট স্বাস্থ্য দপ্তরের নাম করে একটি ভুয়ো মেইল ID থেকে তাঁর কাছে নিয়োগপত্র পাঠায় অভিযুক্তরা । নিয়োগপত্র দেখে সন্ধেহ হওয়ায় স্বাস্থ্যদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন পায়েল । তারপরই তিনি প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দিতে শুরু করেন রাকেশকে । কিন্তু টাকা ফেরত না পাওয়ায় অবশেষে 12 অক্টোবর মালদা সাইবার ক্রাইম থানায় দুই মহিলা সহ রাকেশের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন তিনি ।
পায়েল কুণ্ডু বলেন, "মৌমিতা মজুমদারই আমাকে প্রথমে চাকরির প্রস্তাব দেয়৷ তার বাড়িতেই রাকেশ ও সোনালির সঙ্গে আমার কথা হয়৷ ওরা চাকরি দেওয়ার জন্য 12 লাখ টাকা চেয়েছিল৷ শেষ পর্যন্ত দর কষাকষিতে 11 লাখ টাকায় চাকরি ফাইনাল হয়৷ আমাকে স্বাস্থ্য দপ্তরের চতুর্থ শ্রেণির পদে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল অভিযুক্তরা ৷" পায়েলে আরও অভিযোগ, শুধু তিনি না আরও অনেককের কাছ থেকেই চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা নিয়েছে অভিযুক্তরা ।
এদিকে অভিযোগ পেয়ে রাকেশ বেরাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ৷ মৌমিতা ও রাকেশের স্ত্রী সোনালির খোঁজের তল্লাশি চলছে । মালদা সাইবার ক্রাইম থানার তদন্তকারী এক আধিকারিক জানান, এই ঘটনায় আপাতত রাকেশকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৷ তবে এখনও পর্যন্ত অভিযুক্ত দুই মহিলার খোঁজ পাওয়া যায়নি৷ তাদের খোঁজ চলছে ৷ এই চক্রের সঙ্গে আরও কারোর যোগ রয়েছে কি না তা তদন্ত করছে পুলিশ ৷ পাশাপাশি রাকেশকেও জিঞ্জাসাবাদ চালাচ্ছে পুলিশ ।