মালদা, 14 এপ্রিল : কংগ্রেস ও তৃণমূল কর্মীদের সংঘর্ষে জখম দু'পক্ষের মোট 8 জন। ঘটনাটি চাঁচল 1 ব্লকের কলিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের নুরগঞ্জ এলাকার। জখমদের উদ্ধার করে চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভরতি করা হয়। তাঁদের মধ্যে দু'জনের অবস্থা অবনতি হওয়ায় তাঁদের মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থানে যায় চাঁচল থানার পুলিশ।
ভিডিয়োয় শুনুন আসিফ মেহবুব ও রেজাউল খানের বক্তব্য স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, সংঘর্ষের পর থেকে গ্রামের বেশ কয়েকজন বাচ্চার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। ঘটনাস্থানে উপস্থিত রয়েছেন চাঁচলের বিধায়ক আসিফ মেহবুব। এই ঘটনায় অভিযোগ উঠেছে কলিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান রেজাউল খানের বিরুদ্ধে। যদিও, অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।
আজ বিকেলে দলীয় প্রার্থী ইশা খান চৌধুরির সমর্থনে বিকেল 4 থেকে 8টা পর্যন্ত নুরগঞ্জ গ্রামের চৌমাথা মোড়ে কংগ্রেসের পথসভা ছিল। সভার জন্য তারা নির্বাচন কমিশনের কাছে থেকে 4 ঘণ্টার অনুমতি নেয়। সেইমতো বিকেল 4টের সময় মঞ্চের সামনে চেয়ার পাতার কাজ শুরু করেন কংগ্রেস কর্মীরা। অভিযোগ, সেইসময় কলিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান রেজাউলের নেতৃত্বে কয়েকজন যুবক হামলা চালায়। কংগ্রেসের ফ্ল্যাগ-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলে তারা। শুধু তাই নয়, চৌমাথা মোড়ে কংগ্রেস সমর্থকদের কয়েকটি দোকানেও ভাঙচুর চালায়। এর প্রতিবাদ জানান কংগ্রেস কর্মীরা। এরপরেই দু'পক্ষের মধ্যে লাঠালাঠি শুরু হয়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থানে যায় চাঁচল থানায় পুলিশ। তারা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। স্থানীয় বাসিন্দা সীমা খাতুন বলেন, "কংগ্রেসের পথসভা শুরু হওয়ার আগে স্থানীয় তৃণমূলের সমর্থক স্বপন কংগ্রেসের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে। স্বপনকে বাধা দিতে গেলে তৃণমূলের আরও কয়েকজন সমর্থক ঘটনাস্থানে আসে। এরপর তারা মঞ্চ ও চেয়ার ভাঙচুর করে। আমরা এলাকায় শান্তি চাই।"
অন্য এক স্থানীয় বাসিন্দা আনোয়ারা বিবি বলেন, "আমার ভাশুর আগে কংগ্রেস থেকে পঞ্চায়েত ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। তারপর থেকেই আমাদের সহ্য করতে পারে না স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা। আজ ভাশুরকে মারধরও করে।"
চাঁচলের বিধায়ক আসিফ মেহবুব বলেন, " চাঁচল 1 ব্লকের কলিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের নুরগঞ্জ মোড়ে আজ ইশা খানের সমর্থনে এক পথসভার আয়োজন করা হয়েছিল। আজ সকালে তৃণমূল আশ্রিত কয়েকজন দুষ্কৃতী কংগ্রেস কর্মীদের হুমকি দিয়ে যায়। এই ঘটনায় স্থানীয় প্রধান রেজাউল খান জড়িত আছেন বলে শোনা যাচ্ছে। আমরা ঘটনাটি চাঁচলের IC-কে জানাই। এরপর ঘটনাস্থানে পুলিশকর্মীরা আসেন। তাঁদের সামনেই চেয়ার-টেবিল, দোকান ঘর ভাঙচুর করে তৃণমূল কর্মীরা। আমাদের 4 জন কর্মী জখম। আমরা নির্বাচনে কমিশনে অভিযোগ জানাব।"
এদিকে, অভিযোগ অস্বীকার করে কলিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান রেজাউল খান বলেন, "পার্টি অফিস থেকে খবর পেলাম, আমাদের কর্মীদের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি ঘটনাস্থানে গিয়ে দেখি কংগ্রেসের কর্মীরা লাঠি নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। কংগ্রেস কর্মীরা নিজেরাই চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করে। আমরা সমস্ত ঘটনা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।"