পুরুলিয়া, 19 ফেব্রুয়ারি : পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা রঘুনাথপুরে । নিজেদের মধ্যেই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লেন বিজেপি নেতাকর্মীরা । আদালতের নির্দেশমতো আজ পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর দুই নম্বর ব্লকের মঙ্গলদা-মৌতড় গ্রাম পঞ্চায়েতে অনুষ্ঠিত হয় বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া । বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠ থাকায় নিয়মমতো বিজেপির প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচিত হয় । এরপরই প্রধান উপপ্রধান গঠনকে ঘিরে ব্যাপক ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন বিজেপি নেতাকর্মীরাই । সেই ঝামেলা হাতাহাতিতে গিয়ে পৌঁছায় । পরে পুলিশের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় ।
2018 সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে পুরুলিয়া জেলার রঘুনাথপুরের মঙ্গলদা-মৌতোড় গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট 12টি আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছিল নয়টি, তৃণমূল কংগ্রেস দুটি এবং সিপিআইএম একটি আসন পেয়েছিল । এরপর পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনের দিন বিস্তর ঝামেলা হয় এই পঞ্চায়েতে । অভিযোগ উঠেছিল, বহিরাগতরা ঢুকে পড়ে বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া ভন্ডুল হয়ে যায় । কিন্তু বাস্তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ কম হওয়া সত্বেও তৃণমূলের প্রধান, উপপ্রধান নির্বাচিত করে পঞ্চায়েতের কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল তৃণমূল কংগ্রেস । এর বিরুদ্ধে বিজেপির তরফে মামলা করা হলে হাইকোর্ট পুরুলিয়া জেলাশাসকের রিপোর্ট তলব করলেও তাৎকালীন জেলাশাসক কোনও রিপোর্ট দেননি ৷
এরপর 2020 সালের 23 সেপ্টেম্বর পুরুলিয়ার জেলাশাসক স্থানীয় বিডিওকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করেন ওই পঞ্চায়েতের কাজ চালানোর জন্য । এর বিরুদ্ধে বিজেপি পুরুলিয়া জেলাশাসকের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে আর একটি মামলা দায়ের করে হাইকোর্টে । সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে 29 জানুয়ারি বিচারপতি অমৃতা সিনহা নির্দেশ দেন, পরবর্তী তিন সপ্তাহের মধ্যে পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার । আদালতের সেই নির্দেশমতো আজ ওই পঞ্চায়েতে সম্পন্ন হল বোর্ড গঠনের কাজ । রুকনি গ্রামের বাসিন্দা বলরাম ধীবর পঞ্চায়েত প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন এবং বাঁন্দা গ্রামের বাসিন্দা মুক্তা বাউরি উপপ্রধান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন । এদিনের এই পঞ্চায়েত গঠনের জন্য বিজেপির নয়জন সদস্য সভায় উপস্থিত থাকলেও তৃণমূলের দুজন সদস্য ও সিপিআইএমের একজন সদস্য সভায় অনুপস্থিত ছিলেন ।
আরও পড়ুন : তিন সপ্তাহের মধ্যে পুরুলিয়ার একটি গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের নির্দেশ হাই কোর্টের
জানা গিয়েছে, দলীয় ভাবে মঙ্গলদা এক নম্বর বুথ থেকে জয়ী বিজেপি সদস্য বনডাঙ্গার বাসিন্দা দীনেশ মুর্মুকে প্রধান নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল অনেক আগেই । কিন্তু তার পরিবর্তে চক্রান্ত করে রুকনি গ্রামের বাসিন্দা বলরাম ধীবর পঞ্চায়েত প্রধান হিসেবে নির্বাচন করা হয় । এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন বিজেপি নেতাকর্মীরা । এই উত্তেজনা হাতাহাতিতে গিয়ে পৌঁছায় । ঘটনায় রঘুনাথপুর দুই নম্বর ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপির সদস্য কালীচরণ বাউরি দলেরই কর্মী সমর্থকদের হাতে জখম হন । তাকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ ।