পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

নেতাজির 125তম জন্মদিবসে পড়ুয়াদের স্মার্টফোন দেবে সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয় - নেতাজিজয়ন্তী

2020 সালের 20 মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে রাজ্যের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ সময় ধরে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ধীরে ধীরে রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ই অনলাইন মাধ্যমে পড়ুয়াদের পঠন-পাঠন চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। পুরুলিয়ার সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়েও অনলাইন ক্লাস করানো হলেও, দুর্বল ইন্টারনেট পরিষেবা বা স্মার্টফোনের অভাবে অনেক আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া পড়ুয়ারা তাতে অংশগ্রহণ করতে পারছিলেন না। এমনই তথ‍্য উঠে এসেছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের 'অনলাইন স্টাডি কমিটি'র রিপোর্টে।

sidhu kanhu birsa university will start distributing smartphone to students
নেতাজিজয়ন্তীতে পড়ুয়াদের স্মার্টফোন দেবে সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়

By

Published : Jan 8, 2021, 7:56 PM IST

কলকাতা, 8 জানুয়ারি: গতবছর ডিসেম্বর মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিকভাবে দুর্বল পড়ুয়াদের হাতে স্মার্টফোন তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পুরুলিয়ার সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়। তার জন্য একটি তহবিল গঠন করে সেখানে দান করার আবেদন জানানো হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মচারী, আধিকারিক, প্রাক্তনী এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দীপক কর জানাচ্ছেন, ইতিমধ্যেই সেই তহবিলে প্রায় দেড় লাখ টাকা অনুদান জমা পড়েছে। চলতি বছর 23 জানুয়ারি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোসের 125তম জন্মদিবসের অনুষ্ঠানেই আনুষ্ঠানিকভাবে পড়ুয়াদের স্মার্টফোন দেওয়ার সূচনা করা হবে।

2020 সালের 20 মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে রাজ্যের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ সময় ধরে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ধীরে ধীরে রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ই অনলাইন মাধ্যমে পড়ুয়াদের পঠন-পাঠন চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। পুরুলিয়ার সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়েও অনলাইন ক্লাস করানো হলেও, দুর্বল ইন্টারনেট পরিষেবা বা স্মার্টফোনের অভাবে অনেক আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া পড়ুয়া তাতে অংশগ্রহণ করতে পারছিলেন না। এমনই তথ‍্য উঠে এসেছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের 'অনলাইন স্টাডি কমিটি'র রিপোর্টে। কমিটি খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছিল, অনলাইন মাধ্যমে 70-75 শতাংশ পড়ুয়ার কাছে পৌঁছানো গেলেও, স্মার্টফোনের অভাবে বাকি রয়ে যাচ্ছে 20-25 শতাংশ পড়ুয়া। 'অনলাইন স্টাডি কমিটি'র সেই রিপোর্ট দেখে সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দীপক কর আর্থিকভাবে দুর্বল এবং পড়াশোনায় আগ্রহ আছে এমন পড়ুয়াদের স্মার্টফোন দেওয়ার প্রস্তাব দেন। সেই প্রস্তাবের ভিত্তিতে তৈরি হয় তহবিল। সেই তহবিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত মানুষদেরকে দান করার আবেদন জানানো হয়‌। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই সেই তহবিলে দেড় লাখের মতো অর্থ জমা পড়েছে। যার মধ্যে উপাচার্য নিজে 50 হাজার টাকা দিয়েছিলেন তহবিল গড়ার সময়েই।

আরও পড়ুন:পরীক্ষা নিয়ামকের দায়িত্ব সামলাতে অধ্যাপককে আবেদন যাদবপুরের উপাচার্যের

গত বছর 16 ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর স্তরের জন্য অনলাইন ক্লাস। তাই দ্রুত আর্থিকভাবে দুর্বল পড়ুয়াদের চিহ্নিত করে তাঁদের হাতে স্মার্টফোন তুলে দিতে উদ‍্যোগী হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যাতে অনলাইন ক্লাস করা থেকে কোনও পড়ুয়া বঞ্চিত না থেকে যান। সেই উদ্দেশ্যে গত 5 জানুয়ারি প্রথম সেমেস্টারের পড়ুয়াদের উদ্দেশ‍্যে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে। সেখানে বলা হয়েছে, অনলাইন স্টাডি কমিটি উপাচার্যের সম্মতিক্রমে অনলাইন ক্লাস চালিয়ে যাওয়ার জন্য একটি করে স্মার্টফোন দিতে চায়। বিশেষত, আর্থিকভাবে দুর্বল ও একইসঙ্গে মেধাবী পড়ুয়াদের এই সুবিধা দেওয়া হবে। তাই তাঁদের বলা হচ্ছে, 16 জানুয়ারির মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রধানের মাধ্যমে অনলাইন স্টাডি কমিটির কাছে আবেদন জানাতে।

কারা যোগ্য এই সুবিধা পাওয়ার জন্য ? প্রথমত, শুধুমাত্র স্নাতকোত্তরের প্রথম সেমেস্টারের পড়ুয়াদের স্মার্টফোন দেওয়া হবে। তৃতীয় সেমেস্টারের পড়ুয়ারা এই সুবিধা পাবেন না। সংশ্লিষ্ট পড়ুয়াকে স্নাতক স্তরে অন্ততপক্ষে 60 শতাংশ নম্বর পেতে হবে। স্কলারশিপ রয়েছে এমন পড়ুয়ারা এই সুবিধার জন্য আবেদন করতে পারবেন না। বছরে 24 হাজারের বেশি আয় নেই, এই মর্মে ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসারের কাছ থেকে আনা ইনকাম সার্টিফিকেট জমা করা বাধ্যতামূলক। উপযুক্ত নথি সহ বিভাগীয় প্রধান এর কাছে অনলাইনেও আবেদন জানাতে পারবেন ইচ্ছুক পড়ুয়ারা। স্মার্টফোন পাওয়ার পর ক্লাসে 80 শতাংশ উপস্থিতিও বাধ‍্যতামূলক করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে।

আরও পড়ুন:উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের উপস্থিতি সংক্রান্ত সংসদের নির্দেশিকায় বিভ্রান্ত প্রধান শিক্ষকদের একাংশ

সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দীপক কর জানাচ্ছেন, ইচ্ছুক পড়ুয়ারা বিভাগীয় প্রধানদের কাছে আবেদন করলে সেগুলি যাচাই করে চূড়ান্ত নামের তালিকা তৈরি করবেন প্রধানরা। আর সেই তালিকার ভিত্তিতে পড়ুয়াদের স্মার্টফোন দেওয়ার সূচনা করা হবে 23 জানুয়ারি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর 125 তম জন্মদিবসে‌। দীপক কর বলেন, "এখন ক‍্যাম্পাসে বেশি মানুষের জমায়েতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আগামী 23 জানুয়ারি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর 125তম জন্মদিবস, আমাদের কাছে ওইদিনটি খুব গর্বের ও শ্রদ্ধার। আমরা তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, পড়ুয়াদের স্মার্টফোন যে দিচ্ছি এবং দেব সেই বাতাবরণটা তৈরির জন্য আমরা ওইদিন প্রত্যেকটি বিভাগের একজন করে নিডি পড়ুয়ার হাতে স্মার্টফোন তুলে দেব। তারপরে নর্ম‍্যাল গতিতে হবে। কিন্তু, ওই দিনটা ছাত্রদের কাছে, আমাদের কাছে পূণ্যদিন। তাই ওইদিন প্রত‍্যেক বিভাগের একজন করে নিডি পড়ুয়াকে আমরা স্মার্টফোন দেব। যাতে ভিড় বেশি না হয় তাই একসঙ্গে সবাইকে না দিয়ে একজন করে পড়ুয়াকে দিয়ে বিতরণ প্রক্রিয়ার আনুষ্ঠানিক সূচনা করা হবে।"

প্রথম ধাপে মোট 100 জনের মতো পড়ুয়াকে স্মার্টফোন দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিকভাবে 22টি বিভাগের প্রতিটি থেকে 5 জন পড়ুয়ার নামের তালিকা তৈরি করা হবে স্মার্টফোন দেওয়ার জন্য। সেই তালিকা প্রথম স্থানে থাকা পড়ুয়ার হাতেই 23 জানুয়ারি তুলে দেওয়া হবে স্মার্টফোন।

ABOUT THE AUTHOR

...view details