পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়াতে আদিবাসীদের যোগব্যায়াম করাচ্ছে সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয় - Sidho-Kanho-Birsha University is teaching yoga to tribal people to increase immunity

20টি আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামকে বিগত এক বছর ধরে এই হাব থেকে তাদের উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে । কোরোনা আবহে সেরকমই একটি উদ্যোগ, ইমিউন ভিলেজ ।

লক্ষ্য ইমিউনিটি বৃদ্ধি, আদিবাসীদের যোগা করাচ্ছে সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়
লক্ষ্য ইমিউনিটি বৃদ্ধি, আদিবাসীদের যোগা করাচ্ছে সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়

By

Published : May 10, 2020, 10:45 PM IST

Updated : May 11, 2020, 12:46 AM IST

কলকাতা, 10 মে: কোরোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার সবথেকে ভালো উপায় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তথা ইমিউনিটি বাড়িয়ে তোলা । তাই রাজ্যের আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে ইমিউনিটি বাড়িয়ে তোলার জন্য আগেই ভেষজ, আয়ুর্বেদিক দ্রব্য বিনামূল্যে বিলি করার উদ্যোগ নিয়েছিল পুরুলিয়ার সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয় । এবার সেই একই লক্ষ্যে আরও একটি নতুন উদ্যোগ নিয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয় । রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আদিবাসী গোষ্ঠীর মানুষদের যোগব্যায়াম শেখানো হচ্ছে ।

কেন্দ্রীয় সরকারের ডিপার্টমেন্ট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (DST) অধীনে সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ে আদিবাসী সম্প্রদায়ের উন্নয়নের জন্য সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ইনোভেশন হাব রয়েছে । মোট 20টি আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামকে টার্গেট করে বিগত এক বছর ধরে এই হাব থেকে তাদের উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে । কোরোনা আবহে সেরকমই একটি উদ্যোগ, ইমিউন ভিলেজ । পুরুলিয়ার এক নম্বর ব্লকের বরাঘুটু গ্রামের আদিবাসীদের ইমিউনিটি বৃদ্ধি করে ইমিউন ভিলেজ তৈরির কাজ করা হয় । সেই গ্রামে ক্যাম্প করে আদিবাসীদের বিনামূল্যে আদা, হলুদ, লবঙ্গ, ইউক্যালিপটাস তেলের মতো বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক ভেষজ সামগ্রী দেওয়া হয় । সেগুলির ব্যবহার সম্পর্কে সচেতনও করা হয় তাদের । এবার আদিবাসীদের ইমিউনিটি বৃদ্ধির লক্ষ্যে যোগব্যায়াম ও প্রাণায়াম প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে হাবের তরফ থেকে ।

সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ইনোভেশন হাবের প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর সুব্রত রাহা জানিয়েছেন, "আদিবাসীদের যোগব্যায়াম ও প্রাণায়াম করানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে । 20টি টার্গেট গ্রামের মধ্যে মোট চারটি গ্রামে যোগা শিবির করানো হবে । মাসের প্রতি সপ্তাহে এক একটি নির্বাচিত গ্রামে যাওয়া হবে । তিনদিন করে চলবে এই শিবির । যেখানে মূলত বর্তমান প্রজন্মের তরুণ-তরুণীরা অংশগ্রহণ করবেন । ইতিমধ্যেই জয়পুর ব্লকের রোপো গ্রামপঞ্চায়েতের সাঁওতাল অধ্যুষিত একদুয়ার গ্রামে যোগব্যায়াম শিবির করা হয়েছে । এই উদ্যোগের জন্য বিভোর অধ্যুষিত গ্রাম ভূপতিপল্লিকেও নির্বাচন করা হয়েছে । আগামী সপ্তাহের শুক্রবার সেখানে গিয়ে যোগব্যায়াম শিবির করা হবে ।"

যোগা শিবির
এর প্রয়োজনীয়তার প্রসঙ্গে সুব্রত রাহা বলেন, "যোগা করার একটা বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা রয়েছে । যোগা আগে আমাদের মুনি-ঋষিরা করতেন । সেটা এখন একটা এলিট মহলের মধ্যে বা এক অংশের মানুষের কাছে কুক্ষিগত ব্যাপার হয়ে ছিল । সেটাকেই জনপ্রিয় করার জন্য আমাদের এই উদ্যোগ । আমাদের শরীরে যে সমস্ত হরমোনাল গ্ল্যান্ডস আছে সেগুলো ইচ্ছাধীন স্নায়ুতন্ত্রের মধ্যে পড়ে না । সিমপ্যাথেটিক এবং প্যারাসিমপ্যাথেটিক নার্ভসগুলোকে যোগের ভাষার ইরা ও পিঙ্গলা দুটো নাড়ি বলা হয় । যদি কেউ নিয়মিত প্রাণায়াম করে তাহলে তার এই স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র সেগুলোর উপরে নিয়ন্ত্রণ আসে খানিকটা । স্বাভাবিকভাবেই স্নায়ুতন্ত্রগুলি যেহেতু হরমোনাল গ্ল্যান্ডসের সঙ্গে ও ইমিউন সিস্টেমের সঙ্গে সম্পর্কিত তাই যোগার মাধ্যমে আমরা প্রতিরক্ষা ক্ষমতাও বাড়াতে পারি ।"

আদিবাসীদের গ্রামে গিয়ে তাঁদের যোগা করাচ্ছেন 8-10 অভিজ্ঞ যোগব্যায়াম প্রশিক্ষক অভিজিৎ দে । সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই উদ্যোগে সামিল রয়েছে পুরুলিয়া জেলার আয়ুষ বিভাগও । আয়ুষ বিভাগের চিকিৎসক অমরনাথ কোলে এবং অর্ক মুখোপাধ্যায় নির্বাচিত গ্রামগুলিতে গিয়ে স্বাস্থ্য সম্পর্কে আদিবাসীদের সচেতন করছেন । প্রয়োজনে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করেন চিকিৎসকরা । এ ছাড়া ইমিউন ভিলেজের মতো এখানেও গোলমরিচ, লবঙ্গ, দারচিনি, কাগজি লেবু ও রসুন দেওয়া হয়‌ । সেইসব জিনিস নিয়ে কীভাবে সকালে বিশেষ চা করে পান করতে হবে তা শেখানো হয় ।

বিশেষ চা তৈরি শেখানো হচ্ছে

শুধু যোগার মাধ্যমে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি নয়, আদিবাসীদের দিয়ে ঔষধি গুণসম্পন্ন গাছ চাষ করানোরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে । যোগা প্রশিক্ষণের সঙ্গে সঙ্গেই 'বনৌষধি ভিলেজ' তৈরির লক্ষ্যেও কাজ করছেন তাঁরা ।

Last Updated : May 11, 2020, 12:46 AM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details