পুরুলিয়া, 30 জুলাই : কোরোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে । এর মোকাবিলায় বারবার মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে । কিন্তু, আদৌও কি তা কেউ মানছে ? বাস্তব চিত্রটা অন্য কথাই বলছে । প্রান্তিক জেলা পুরুলিয়ায় দিন দিন বেড়েই চলেছে কোরোনায় আক্রান্তের সংখ্যা । তবুও হুঁশ ফেরেনি এক শ্রেণির মানুষের । জেলা প্রশাসনের কড়া নির্দেশিকা সত্ত্বেও মাস্ক না পরে অনেকেই বেরিয়ে পড়ছেন রাস্তায় । মানছেন না সামাজিক দূরত্ব । পুরুলিয়ার সর্বত্র একই ছবি দেখা যাচ্ছে ।
পুরুলিয়ায় কোরোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তবে, আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন অধিকাংশই। বাকিরা চিকিৎসাধীন রয়েছেন । জেলায় কনটেনমেন্ট জ়োনের সংখ্যা 20 টি । যার মধ্যে পুরুলিয়া শহরেই রয়েছে সাতটি। আর তাই কোরোনা সংক্রমণ ঠেকাতে তৎপর জেলা পুলিশ প্রশাসন । কনটেনমেন্ট জ়োনে লকডাউন জারি করা হয়েছে । রাস্তায় বেরিয়ে মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে সাধারণ মানুষকে । মাস্ক ব্যবহার না করে রাস্তায় বের হলে কড়া ধমক দেওয়ার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে আটক করছে জেলা পুলিশ । জেলার প্রতিটি সীমান্ত এলাকার সঙ্গে সঙ্গে পুরুলিয়া শহরে প্রবেশের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেট । রাতদিন চলছে নাকা চেকিং । মাস্ক না পরলে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না শহরে । জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোরোনা সচেতনতায় জেলাজুড়ে চালানো হচ্ছে ট্যাবলো প্রচার । সরকারি সমস্ত দপ্তর থেকে শুরু করে সদর হাসপাতাল, প্রতিটি থানায় মাস্ক না পরলে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন । শুধু তাই নয় , যত্রতত্ৰ পান-গুটখার পিক ফেললে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশিকা জারি হয়েছে জেলায় ।
জেলা পুলিশের সচেতনতাই সার, লকডাউন-বিধি মানছে না পুরুলিয়ার একাংশ - পুরুলিয়া
কোরোনা সচেতনতায় জারি হওয়া নিষেধাজ্ঞাকে একবারে অগ্রাহ্য করে এক শ্রেণির মানুষ বেরিয়ে পড়ছেন রাস্তায় । পুরুলিয়ার বেশিরভাগ জায়গায় দেখা যাচ্ছে কোনও সামাজিক দূরত্ব নেই । জায়গায় জায়গায় জটলা । সাইকেল আরোহী, বাইক আরোহী বা পথচলতি সাধারণ মানুষ - কারও মুখে মাস্ক নেই । সবজি বাজার থেকে শাড়ির বাজার, জেলা আদালত থেকে জেলাশাসক দপ্তর, সদর হাসপাতাল প্রতিটি জায়গায় একই ছবি ।
এই বিষয়ে কয়েকজনকে জিজ্ঞাসা করা হলে সকলেই বিষয়টি এড়িয়ে যান । অখিল মাহাত নামে এক ব্যবসায়ীকে মাস্ক না পরার কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন , " হাতে মাস্ক তো আছে । খাচ্ছিলাম বলে পরা হয়নি । আর তারপর এখন বাড়ি যাব বলে আর পরিনি । এমনিতে সবসময় মাস্ক পরি ।"
জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, "রাজ্য সরকার ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বার বার সাধারণ মানুষকে মাস্ক পরার জন্য সচেতন করা হচ্ছে । নিজের জীবন ও অপরের জীবন সুরক্ষিত রাখতে মাস্ক পরা অত্যন্ত জরুরি । কোরোনার বিরুদ্ধে এই লড়াই আমাদের সবার । সবাই যদি সচেতন না হন , তাহলে এই লড়াই জেতা মুশকিল । শুধু মাস্ক পরা নয় , যত্রতত্র থুতু না ফেলার জন্যও সচেতন করা হচ্ছে সাধারণ মানুষকে । পরিবার ও সমাজের সুরক্ষার স্বার্থে সকলরই সচেতন হওয়া দরকার ।"