পুরুলিয়া, 19 অক্টোবর: বছরের 361 দিন মা দুর্গা থাকেন ব্যাঙ্কের লকারে ৷ রাজবাড়িতে মা আসেন কড়া পুলিশি পাহারায় ৷ দুর্গা পুজোর চারদিন জেলা পুলিশের কড়া নিরাপত্তায় নাটমন্দিরে বিরাজমান থাকেন মা ৷ দশমী পুজো শেষে ব্যাঙ্কের লকারে ফিরে যান ৷ জঙ্গলমহল পুরুলিয়ার জয়পুরের সিংদেও পরিবারের পুজো ৷ এখানকার অন্যতম আকর্ষণ সোনার দ্বিভুজা দুর্গা ও রূপোর চালচিত্র ৷ এছাড়াও পুজোর চারদিন হয় নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ৷ জেলা তথা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তো বটেই, প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ড, বিহার থেকেও দর্শনার্থীরা ভিড় জমান জয়পুর রাজবাড়ির দুর্গাপুজোয় ৷ কিন্তু এবছর কোরোনা পরিস্থিতিতে দর্শনার্থীদের ভিড় এড়াতে চাইছে রাজপরিবার ও স্থানীয় প্রশাসন ৷ তাই সোনার দুর্গা আসবে না বাড়িতে ৷ লকারেই থাকবে মায়ের মূর্তি ও চালচিত্র ৷ তবে পুজো হবে রীতি মেনেই ৷
জয়পুর রাজবাড়ির পুজোর ইতিহাস সম্পর্কে রাজ পরিবারের অন্যতম সদস্য শঙ্কর নারায়ণ সিংদেওর কাছ থেকে জানা যায়, চারশো বছর আগে 1600 খ্রিস্টাব্দে রাজা জয়সিংহ পুরুলিয়ায় আসেন ৷ যাঁর নামে এই অঞ্চলের নাম জয়পুর ৷ জয় সিংহ উজ্জ্বয়নী থেকে এসে এলাকার মুণ্ডা সর্দার খামার মুণ্ডাকে হত্যা করে জঙ্গলমহলের এই এলাকা দখল করেন ৷ খামার মুণ্ডা একটি খাঁড়াকে ইষ্ট দেবী হিসেবে পুজো করতেন ৷ জয় সিংহ খাঁড়াটিও ছিনিয়ে নেন ৷ সেই খাঁড়া ও কলা বউয়ের পুজোর প্রচলন হয় সিংদেও পরিবারে ৷ এর বহু বছর পরে সপ্তম রাজা কাশিনাথ সিংহের আমলে দুর্গাপুজোর দিন একটি অঘটন ঘটে ৷ আগুন লেগে যায় কলা বউয়ে ৷ পুড়ে ছাই হয়ে যায় মন্দির ৷ এরপরই রাজা কাশিনাথ সিংহ মানত করেন, সোনার প্রতিমা তৈরি করে তাতে রূপোর চালচিত্র লাগিয়ে মায়ের পুজো করবেন ৷