হলদিয়া, 8 মে: বিশাখাপটনমের রাসায়নিক কারখানায় গ্যাস লিকেজের ঘটনায় ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে 11 জনের । অসুস্থ হাজারেরও বেশি স্থানীয় বাসিন্দা ও গবাদি পশু । কোরোনা আতঙ্কের মধ্যে এই ঘটনা নাড়া দিয়েছে গোটা দেশকে । সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হলদিয়ার প্রতিটি শিল্প সংস্থাকে সতর্ক হওয়ার বার্তা দিল রাজ্য প্রশাসন ।
চলতি বছরের 15 ফেব্রুয়ারি ঠিক এমনই এক দুর্ঘটনা ঘটেছিল হলদিয়ার এক বেসরকারি কারখানায় । অ্যামোনিয়া গ্যাস লিক করে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বহু মানুষ । যদিও কারও মৃত্যু হয়নি । হলদিয়া পেট্রোকেমিকেলস লিমিটেড সংস্থাতেও আগুন ছড়িয়ে পড়ায় মৃত্যু হয়েছিল বেশ কয়েকজনের । কিন্তু বিশাখাপটনমের গ্যাস লিকেজের দুর্ঘটনা সেসব ঘটনাকে ছাপিয়ে গেছে । এই দুর্ঘটনাকে মাথায় রেখেই নবান্ন থেকে হলদিয়ার শিল্প সংস্থাগুলিকে একটি নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে ।
প্রশাসন সূত্রে খবর, লকডাউনের মাঝেও হলদিয়ার 16 টি শিল্প সংস্থা তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে । যদিও কর্মীর অভাবে অনেক সংস্থাই উৎপাদন বন্ধ রেখেছে। এই পরিস্থিতিতে গতকালের ঘটনার পর হলদিয়ার সমস্ত শিল্প সংস্থাগুলিকে রাজ্য সরকারের শিল্প পরিদর্শক বিভাগের তরফে 17 দফার একটি নিয়মাবলী পাঠানো হয়েছে । সেই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, "লকডাউনে ছোট শিল্প সংস্থাগুলি কাজ বন্ধ রেখেছে । সেক্ষেত্রে রাসায়নিক ক্ষেত্রগুলিতে গ্যাস লিকেজের সম্ভাবনা থেকেই যায় । উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণ না থাকলে যেকোনও মুহূর্তে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে । তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন সাধারণ মানুষ ।" এই রক্ষণাবেক্ষণের দিকটি হলদিয়ার শিল্প সংস্থাগুলি কীভাবে দেখছে এবং যদি কোনওভাবে অঘটন ঘটে যায় সেক্ষেত্রে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে সেই ব্যাপারে সংস্থাগুলির কর্তা ব্যক্তিদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে । এছাড়াও হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর তরফেও একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে হলদিয়ার শিল্প সংস্থাগুলিকে । রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়টিতে কীভাবে নজর দেওয়া হচ্ছে 7 দিনের মধ্যে তা জানতে চাওয়া হয়েছে । মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর পাঠানো চিঠি এ বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার জেলাশাসক পার্থ ঘোষ জানান, "হলদিয়ার সমস্ত শিল্পসংস্থার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও কারখানা নিরাপত্তা বিষয়ক আধিকারিককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । সেইসঙ্গে হলদিয়া পৌরসভাকেও নজরদারি করার আবেদন জানানো হয়েছে ।" হলদিয়া পেট্রোকেমিকেলস লিমিটেডের প্লান্ট হেড অশোক কুমার ঘোষ চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করে জানান, "রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়টি নিয়ে আমরা সবসময়ই সতর্ক থাকি । আগের চেয়ে অনেক বেশি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে । নির্দেশগুলি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে ।"