পাঁশকুড়া , 6 জুলাই : আমফানে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের বঞ্চিত করে অপেক্ষাকৃত ধনীদের টাকা পাইয়ে দেওয়া ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পাঁশকুড়া থানার সিদ্ধা এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে তালা লাগালেন বাসিন্দারা । প্রায় ঘণ্টা দুয়েক ধরে পঞ্চায়েত কর্মীরা সেখানে আটকেছিলেন ৷ এরপর পাঁশকুড়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থানে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে ৷
জেলাজুড়ে আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একাধিক ঘর-বাড়ি । রাজ্য সরকারের তরফে সেই ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি মেরামতির জন্য 20 হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয় । তারপর বিভিন্ন এলাকার ক্ষতিগ্রস্তরা তাঁদের আবেদনপত্র জমা দেন স্থানীয় পঞ্চায়েত অফিসগুলিতে । সেইমতো সিদ্ধা এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অফিসেও আবেদনপত্র জমা পড়ে । কিন্তু সম্প্রতি সেই তালিকা প্রকাশ হতেই দেখা গেছে, একাধিক ব্যক্তির পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও ক্ষতিগ্রস্ত তালিকায় তাদের নাম রয়েছে । এছাড়া এলাকার এক পঞ্চায়েত সদস্য জহিরুল হোসেন তাঁর বাবা-মা সহ চার আত্মীয়ের নামে বেআইনিভাবে সরকারি ক্ষতিপূরণের টাকা তুলেছেন বলে অভিযোগ । অথচ প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত ও দুস্থরা বঞ্চিত হয়েছেন । এই অভিযোগ তুলে সোমবার দুপুরে গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বাসিন্দারা । পরে অফিসে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয় ৷ আটকে পড়েন একাধিক পঞ্চায়েত সদস্য থেকে পঞ্চায়েত কর্মীরা । পরে খবর পেয়ে পাঁশকুড়া থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন ।
এই বিষয়ে বরুণ সিং নামে এক বিক্ষোভকারী অভিযোগ করে বলেন , "ঝড়ে যাদের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পঞ্চায়েতের তরফ থেকে তাদের বাড়ির ছবি তোলা হয়েছিল । কিন্তু তালিকা যখন প্রকাশ পেল তখন দেখা যায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা কেউ ক্ষতিপূরণ পায়নি । যাদের পাকা বাড়ি রয়েছে তারা ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছে । আমরা চাই প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষতিপূরণের টাকা পাক । যে কারণে আমরা আজ পঞ্চায়েত অফিসে তালা লাগিয়ে স্বচ্ছভাবে ক্ষতিপূরণ আদায়ের দাবি জানিয়েছি ।"
আমফান ক্ষতিপূরণে দুর্নীতির অভিযোগ, পাঁশকুড়ায় পঞ্চায়েত অফিসে তালা বিক্ষোভকারীদের - Amphan corruption
আমফান ক্ষতিপূরণে দুর্নীতির অভিযোগ ৷ সেই অভিযোগে সিদ্ধা এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে বিক্ষোভ দেখালেন বাসিন্দারা ৷ পরে অফিসে তালা লাগিয়ে দেন তাঁরা ৷ যদিও পুলিশের হস্তক্ষেপে পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় ৷
তালিকায় যে ভুল-ত্রুটি রয়েছে তা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন তৃণমূল পরিচালিত সিদ্ধা এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সন্দীপ কুমার ওঝা । বলেন, "দ্রুত তালিকা তৈরি করতে গিয়ে আমাদের কয়েকটি বিষয়ে ভুল-ত্রুটি হয়েছে । তবে সেই ভুল শুধরে নেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে আমরা BDO-র কাছে টাকা জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছি । অনেকেই সেই টাকা জমা দিয়েছেন ৷ আজও কয়েকজন টাকা জমা দেবেন । তবে BJP-র ইন্ধনে যাঁরা আজ পঞ্চায়েত অফিসে তালা লাগিয়েছেন তাঁদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানাব । কোনও অনুমতি ছাড়া এভাবে পঞ্চায়েত অফিসে তালা লাগানো যায় না ।"