হলদিয়া, 30 মে : হলদিয়াতে প্রকাশ্যে এল আদি ও নব্য তৃণমূলের কোন্দল । দলের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে অবস্থানে বসেন হলদিয়া পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান দেবপ্রসাদ মণ্ডল ও তাঁর অনুগামীরা ।
দেবপ্রসাদবাবুর অভিযোগ, দলের একাংশ অবৈধ কাজের সঙ্গে জড়িত । যার প্রতিবাদ করে দলের একাংশের হাতে হেনস্থার শিকার হয়েছেন তিনি । তাঁকে দল ছাড়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে । এই কারণেই আজ অবস্থানে বসেন তিনি । যদিও এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি হলদিয়া পৌরসভার বর্তমান চেয়ারম্যান শ্যামল আদক । তাঁর বিরুদ্ধেই অভিযোগ করেছেন দেবপ্রসাদবাবু ।
দেবপ্রসাদবাবু বললেন, "হলদিয়া পৌরসভা তৃণমূল কংগ্রেসের হলেও চেয়ারম্যান তৃণমূল কংগ্রেসকে নিয়ে চলতে চায় না । যারা তৃণমূল কংগ্রেসের জন্ম দিয়েছিল তাদের চেয়ারম্যান রাখেননি । তারা CPI(M)-র কিছু গুন্ডাকে নিয়ে চলতে চাইছে । যারা আমাদের খুন করেছে, তৃণমূল কংগ্রেসের ইজ্জত নিয়েছে, নন্দীগ্রামে লাশ পাচার করেছে এই চেয়ারম্যান তাদের নিয়ে চলতে চাইছে । তৃণমূল কংগ্রেসের পরিবেশ নষ্ট করে দলটাকে ডকে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছে । আমি তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলর । আমার উপর হামলা হচ্ছে । চেয়ারম্যান গুন্ডা পাঠিয়ে দিয়ে হাসছে । এটা তৃণমূলের আদর্শ নয় । বারবার দলীয় নেতৃত্বকে জানিয়েও লাভ হচ্ছে না । তাই আমরা অবস্থান করছি । যদি এরপরেও দলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা না নেয় তাহলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামব ।"
মঙ্গলবার 22 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পঞ্চানন ভুঁইঞার বাড়িতে তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীর সমর্থিত দুষ্কৃতীরা গিয়ে তাঁকে শাসিয়ে আসে এবং তাকে পদত্যাগ করতে বলে । ওই কাউন্সিলর ও তার পরিবারের লোকজনদের গালিগালাজ করা হয় । দেবপ্রসাদবাবু বলেন, "ঘটনার কথা শুনে আমি যখন পঞ্চাননবাবুর বাড়িতে যাই তখন দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায় । পরে আবার তারা হাজির হয়ে চাকরির দাবি করতে থাকে । আমি প্রতিবাদ করলে টানা হেঁচড়া শুরু করে । দিনের পর দিন হয়রানি করছে । আমার বাড়ির সামনেও গালিগালাজ করছে । মন্ত্রীকে জানিয়েও লাভ হয়নি । কয়েকজন দুষ্কৃতী হলদিয়া টাউনশিপে এইসব নোংরামি করে যাচ্ছে । ওদের একটাই উদ্দেশ্য আমাদের দল করতে না দিয়ে BJP-তে পাঠিয়ে দিয়ে ওরা তৃণমূল করতে চায় । CPI(M) যেমন লুটেপুটে খেয়েছিল । এখন আবার লুটেপুটে খেতে চাইছে । কারণ এই চেয়ারম্যান CPI(M) থেকে এসেছে । তাই তারা এখন তাদেরকে নিয়ে লুটেপুটে খেতে চাইছে ।"
প্রায় তিন ঘণ্টা পরে ভবানীপুর থানার পুলিশের অনুরোধে অবস্থান তুলে বাড়ি ফেরেন দেবপ্রসাদবাবু।