পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

Salishi Sabha: স্বামীর ডাকা সালিশি সভায় মহিলাকে মারধর করে গ্রামছাড়া মাতব্বরদের - স্ত্রীকে মারধর করে গ্রামছাড়া মাতব্বরদেj

গ্রাম কমিটির মাতব্বরদের ফতোয়া, দিতে হবে কয়েক লক্ষ টাকা জরিমানা ৷ সেই সঙ্গে স্বামীর ডাকা সালিশি সভায় (Arbitration Meeting) স্ত্রী'কে করা হল মারধর ৷ পাশপাশি স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে, জমি স্বামীর নামে লিখিয়ে নিয়ে গ্রামছাড়া করা হল স্ত্রী'কে ৷

Arbitration Meeting
সালিশি সভা

By

Published : Jan 10, 2023, 9:13 PM IST

গ্রাম কমিটির মাতব্বরদের ফতোয়া, দিতে হবে কয়েক লক্ষ টাকা জরিমানা

নন্দকুমার, 10 জানুয়ারি: মধ্যযুগীয় বর্বরতা! গ্রাম কমিটির মাতব্বরদের ফতোয়া, দিতে হবে কয়েক লক্ষ টাকা জরিমানা (Arbitration Meeting in Nandakumar)। সঙ্গে স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে গ্রাম ছাড়তে হবে। সালিশি সভার নামে গৃহবধূর কপালে জোটে মারধর। এমনকী রাতের অন্ধকারে বেআইনিভাবে করানো হয় ডিভোর্স। ন্যায় বিচারের আশায় পুলিশের দ্বারস্থ গৃহবধূ। ঘটনাটি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দকুমার থানার চুনাখালি গ্রামে।

গত 10 বছর আগে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দকুমারের চুনাখালি গ্রামের ক্ষুদিরাম শাসমলের সঙ্গে বিয়ে হয় শ্যামলী শাসমলের সঙ্গে। তাঁদের তিনটি কন্যা সন্তানও রয়েছে । অভাবের সংসার থাকার কারণে বিয়ের পর ক্ষুদিরাম তাঁর স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে কাজের জন্য ওড়িশায় চলে যান। অভিযোগ, শ্যামলীর সঙ্গে অন্য কোনও পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে বলে ক্ষুদিরাম তাঁকে প্রতিনিয়ত মারধর করতেন। তারপরেই শ্যামলী ফিরে আসেন বাপের বাড়িতে। স্বামীর ভয়ে লুকিয়ে ছিলেন বেশ কিছুদিন ধরে। তারপর ক্ষুদিরাম নিজেই গ্রামের মাতব্বরদের জানান সব ঘটনা।

গ্রামে শ্যামলী ফিরতেই গ্রামের মাতব্বরদের ফতোয়া জারি হয় শ্যামলীর ওপর। গ্রামের মাতব্বররা বলেন, "শ্যামলীর নামে যে জমি রয়েছে, তা স্বামীর নামে করে দিতে হবে। তার সঙ্গে মেয়ের বাপের বাড়ি থেকে শ্যামলীর স্বামীকে 4 লক্ষ টাকা দিতে হবে ৷ এখানেই শেষ নয়, ক্ষুদিরামকে ডিভোর্স দিতে হবে, সঙ্গে গ্রাম কমিটিকে দিতে হবে এক লক্ষ টাকা জরিমানাও।" মঙ্গলবার সালিশি সভায় শ্যামলীকে ডেকে ব্যাপক মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে। গ্রাম কমিটির সদস্য তথা শ্যামলীর স্বামী কার্যত স্বীকারও করেছেন সেকথা।

আরও পড়ুন:বিবাহবিচ্ছেদ চাওয়ায় স্ত্রীকে খুন, দুর্গাপুরকাণ্ডে আদালতে স্বীকার স্বামীর

ক্ষুদিরাম শাসমলের দাবি, তাঁর স্ত্রীর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। যার কারণে গ্রামের সালিশি সভায় তিনি বিচার চান। সালিশি সভায় তাঁকে নতুনভাবে সংসার করতেও নিদান দেওয়া হয়। অন্যদিকে শ্যামলীর দাবি, এদিন জোর-পূর্বক জায়গা জমি রেজিস্ট্রি করে নেওয়া হয় শ্যামলীর কাছ থেকে। কয়েকদিন আগে, ক্ষুদিরামও আবার নতুন বিয়ে করে ৷ তিনি এখন অসহায় ৷ শ্যামলী বাধ্য হয়েই সংবাদমাধ্যমের দ্বারস্থ হন। তাঁর আরও দাবি, জোর-পূর্বক বেআইনিভাবে ডিভোর্স করানো হয়েছে ৷ তবে শ্যামলীর স্বামী ক্ষুদিরাম শাসমল ডিভোর্স জোরপূর্বক হয়েছে বলে মানতে নারাজ। গ্রাম কমিটির সভাপতি প্রজাপতি বর্মন টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকারও করেছেন।

প্রসঙ্গত, যেখানে বিচার ব্যবস্থা রয়েছে, সেখানে একবিংশ শতাব্দীতে গ্রামের মোড়লদের মাতব্বরি যে এখনও বিদ্যমান তা নন্দকুমারের ঘটনায় স্পষ্ট। ন্যায় বিচারের আশায় শ্যামলী বর্মন নন্দকুমার থানায় অভিযোগ করেছেন ৷ 497, 498(A),494/384, 44 আইপিসি-র ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে মোট 10 জনের নামে।

ABOUT THE AUTHOR

...view details