পাঁশকুড়া, 30 সেপ্টেম্বর : এমনিতেই টিভি, ইন্টারনেটের দাপটে হারিয়ে যেতে বসেছে বাংলার প্রাচীন শিল্পকলা পট । পেটের টানে অন্য পেশা বেছে নিয়েছেন বহু শিল্পী । এবার কোরোনা আর লকডাউনে নতুন আঘাত এসেছে পটুয়া পাড়ায় । সরকারি অনুষ্ঠান, মেলা বন্ধ ৷ বন্ধ রুজিরুটিও । এই অবস্থায় পুজোর আগে শাড়ি, চুড়িদার, গেঞ্জি, ওড়না, রুমালের মতো বিভিন্ন সামগ্রীতে ছবি এঁকে বিকল্প আয়ের পথ খুঁজছেন মেদিনীপুর জেলার পটুয়ারা ।
ত্রিশ বছর আগেও পাঁশকুড়ার কেশববাড় গ্রাম পটের গ্রাম হিসেবেই পরিচিত ছিল । এখনও প্রায় 100 জন পটশিল্পী বসবাস করেন এই গ্রামে । মূলত সেপ্টেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত দেশ-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে শিল্পীরা মেলা ও অন্য অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতেন । যার জন্য জুলাই থেকে পটচিত্র তৈরিতে ব্যস্ত হতেন পটুয়ারা । একটি মেলায় অংশগ্রহণ করে ঘরে তুলতেন গড়ে পনেরো থেকে কুড়ি হাজার টাকা । কোরোনার প্রকোপে সে সব অতীত ! এখন সংসার চালাতে হিমসিম অবস্থা । এই সংকট থেকে উদ্ধার পেতে প্রাচীন শিল্পকলাকে পোশাকে ফুটিয়ে তোলার অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁরা । বাজারের চাহিদা দেখে পুজোয় ভালো ব্যবসার আশা করছেন শিল্পীরা ।
টুসি চিত্রকর বলেন, "পূর্বে পটচিত্র শিল্পীদের কদর ছিল । টিভি, ইন্টারনেটের দুনিয়ায় অনেকটাই ভাটা পড়েছে । তাছাড়া পটের দাম বেশি হওয়ায় সাধারণ মানুষ কিনতে পারছে না । ফলে, আমাদের আগের মতো আয় নেই । বহু শিল্পী এ পেশা থেকে সরে গেলেও বাবা-মায়ের শেখানো শিল্প থেকে আমরা সরে আসতে চাই না। তাই এখন ফেব্রিক দিয়ে জামাকাপড়ের ওপরে পটচিত্র ফুটিয়ে তুলছি । ক্রেতারাও সন্তুষ্ট মনে অল্প দামের সামগ্রী ক্রয় করছেন । এই শিল্পকে আরও আধুনিক করতে চাই ৷ যাতে উত্তরসূরিরা শিল্পটিকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে ।"
কীভাবে এল পোশাকের উপর পটচিত্রের ভাবনা ?