পাঁশকুড়া, 2 অক্টোবর :10 মাসের শিশুকে নিগ্রহের অভিযোগে গ্রেফতার পরিচারিকা ৷ ধৃতের নাম কল্পনা সেন ৷ বয়স 50 বছর ৷ পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার ঘটনায় চাঞ্চল্য ৷ প্রৌঢ় পরিচারিকার নির্মম আচরণ দেখে তাজ্জব বনে গিয়েছে পুলিশও ৷
আরও পড়ুন :পড়ানোর নাম করে 12 ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, অভিযুক্ত ইমাম পলাতক
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত কল্পনা সেনকে কাজে রেখেছিলেন ডা. দেবাশিস দাস এবং তাঁর স্ত্রী নবমিতা ভট্টাচার্য ৷ দেবাশিস বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক ৷ তাই সেখানেই থাকতে হয় তাঁকে ৷ সপ্তাহান্তে একবার মাত্র বাড়ি আসতে পারেন তিনি ৷ তাঁর স্ত্রী নবমিতা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার জনস্বাস্থ্য বিভাগের ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার ৷ ফলে মাঝেমধ্যেই কর্মসূত্রে এখানে-ওখানে যেতে হয় তাঁকে ৷
গত বছরের নভেম্বর মাসে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন নবমিতা ৷ মা হওয়ার পর নির্দিষ্ট সময়ের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটিও নেন তিনি ৷ বেশ কিছুটা সময় বাপের বাড়িতে কাটানোর পর পাঁশকুড়ায় ফিরে আসেন নবমিতা ৷ পাঁশকুড়া থানা এলাকার মেচোগ্রামে তাঁদের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে ৷ সেখানেই স্বামী এবং সন্তানের সঙ্গে থাকেন নবমিতা ৷ কিন্তু, চাকরিতে সময় দিতে গিয়ে বেশিরভাগ সময়েই বাড়িতে থাকা হয় না এই দম্পতির ৷ সেই কারণেই একরত্তি মেয়ের দেখভালের জন্য পরিচারিকা হিসাবে কল্পনাকে নিয়োগ করেন তাঁরা ৷
পুলিশ সূত্রে খবর, বেশ কিছুদিন ধরেই কল্পনার আচরণ দেখে সন্দেহ হচ্ছিল দেবাশিস ও নবমিতার ৷ তাঁদের অনুপস্থিতিতে কল্পনা বাচ্চার খেয়াল কীভাবে রাখেন, তা দেখার জন্যই গোপনে ফ্ল্য়াটের ভিতর সিসি ক্যামেরা লাগান দম্পতি ৷ তাতেই ধরা পড়ে আসল ছবি ৷ গত বৃহস্পতিবার অফিসের কাজে কাঁথি গিয়েছিলেন নবমিতা ৷ তাঁর স্বামী দেবাশিস তখন বাঁকুড়ায় ৷ হঠাৎই দুপুরবেলা নিজের স্মার্টফোন থেকে পাঁশকুড়ার ফ্ল্যাটে লাগানো সিসি ক্যামেরার লাইভ ফুটেজ দেখতে শুরু করেন তিনি ৷ আর তাতেই রোম খাড়া হয়ে যায় ওই চিকিৎসকের ৷
একরত্তি শিশুকে তুলে আছাড়, গ্রেফতার পরিচারিকা আরও পড়ুন :5 বছরের শিশুকন্যাকে যৌন নির্যাতন, গ্রেফতার অভিযুক্ত
দেবাশিস দেখেন, তাঁর সন্তানের উপর অকথ্য অত্যাচার করছেন কল্পনা ৷ ওইটুকু শিশুকে তুলে আছাড় মারতেও দেখা যায় তাঁকে ৷ সমানে চলে মারধর ৷ এমনকী, মারের চোটে শিশুটি কান্নাকাটি শুরু করলেও তাতে আমল দেননি ওই পরিচারিকা ৷ সঙ্গে সঙ্গে গোটা ঘটনা স্ত্রীকে জানান দেবাশিস ৷ পরে তিনিও বাড়িতে ফেরেন ৷ এরপরই কল্পনার নামে পাঁশকুড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয় ৷ পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে ৷ পাঁশকুড়া থানার আইসি আশিস মজুমদার জানিয়েছেন, প্রাথমিক জেরায় দোষ স্বীকার করেছেন পরিচারিকা ৷ কেন তিনি এমন আচরণ করতেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷