পাঁশকুড়া, 13 মার্চ : 2016 সালে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ঘোষণা করা হয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুর নির্মল জেলা । তারপরও পাঁশকুড়া পৌরসভার বিরুদ্ধে পরিছন্নতা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ সাধারণ মানুষের । অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই পৌরসভায় সাফাই অভিযান হয় না । ঠিকঠাকভাবে সাফাই অভিযান না হওয়ার কারণে এলাকার যত্রতত্র জমা হচ্ছে আবর্জনা । যা থেকে মশা এবং একাধিক জীবাণুর আঁতুরঘর হয়ে উঠেছে গোটা এলাকা । বিপর্যস্ত হচ্ছে জনজীবন । সেই ক্ষোভের মুখেই এবার পৌরসভা এলাকাকে নির্মল গড়ে তোলার লক্ষ্যে বাড়ি বাড়ি আবর্জনা সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিল পৌরসভা কর্তৃপক্ষ । প্রাথমিকভাবে 10টি ওয়ার্ডে স্বসহায়ক দলের কর্মীদের দ্বারা পরীক্ষামূলক ভাবে সংগ্রহ করা হবে আবর্জনা । তারপরই সমস্ত ওয়ার্ডেই শুরু হবে এই কাজ ।
পাঁশকুড়া পৌরসভায় রয়েছে 18 টি ওয়ার্ড । রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ পাঁশকুড়া স্টেশন ও বাসস্ট্যান্ড । এই দু'টি এলাকা দিয়েই জেলা এবং পার্শ্ববর্তী জেলাগুলির সাধারণ মানুষ যাতায়াত করেন । যত্রতত্র আবর্জনা ও জঞ্জাল পড়ে থাকায় প্রতিনিয়তই নাকে রুমাল চাপা দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে তাদের । এর আগে পৌরসভার তরফে এলাকাগুলিকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য ভ্যাটের গাড়ি ব্যবস্থা করা হয়েছিল । কিন্তু সাফাই কর্মীরা সঠিকভাবে কাজ না করায় তা বাস্তবায়িত হয়নি । ফলে পৌরসভার 1 নম্বর ওয়ার্ড, 8 নম্বর ওয়ার্ড ও 9 নম্বর ওয়ার্ডসহ বিভিন্ন এলাকায় জঞ্জালের স্তূপ তৈরি হয়েছে । ফলে একদিকে যেমন সাধারণ মানুষের মধ্যে কোরোনার আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে তেমন মশাবাহিত রোগের আতঙ্কেও ভুগছেন স্থানীয় বাসিন্দারা । আর ঠিক সেসময়ই সাধারণ মানুষের এই ক্ষোভকে প্রশমিত করার জন্য পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বাড়ি বাড়ি গিয়ে আবর্জনা জোগাড়ের ব্যবস্থা করেছে ।
যার ফলে, প্রতিটি বাড়িতেই দেওয়া হবে একটি করে ডাস্টবিন । সেখানেই বাড়ির আবর্জনা জমা করতে হবে । এলাকার দশটি স্ব-সহায়ক দলের মোট 100 জন কর্মী প্রতিটি বাড়ি থেকে সংগ্রহ করবে সেই আবর্জনা । ওই কর্মীরা বাড়ি থেকে সংগ্রহ করা সেই জঞ্জাল বড় রাস্তার ধারে থাকা ভ্যাটগুলিতে স্থানান্তরিত করবে । পৌরসভার গাড়ি সেখান থেকেই আবর্জনা নিয়ে গিয়ে এক নম্বর ওয়ার্ডের মেদিনীপুর ক্যানেলের পাশে থাকা মূল ভ্যাটে গিয়ে ফেলে আসবে । পৌরসভা কর্তৃপক্ষ এই পদ্ধতির মাধ্যমেই গোটা এলাকাকে নির্মল গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে । প্রাথমিকভাবে 100 জন কর্মী কাজ শুরু করলেও পরে প্রয়োজন অনুযায়ী আরো স্ব-সহায়ক দলের কর্মীকে কাজে লাগানো হবে এই প্রকল্পে । যদিও নাগরিকদের অভিযোগ সিদ্ধান্ত নিলেও কবে তা বাস্তবায়িত হয় সেটাই এখন দেখার ।