পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

স্বামীকে খুনের অভিযোগে যুবতির চুল কেটে শাস্তি কোলাঘাটে - Locals cut hair and harrased a Woman in accusation of Murder

ঘর থেকে উদ্ধার স্বামীর ঝুলন্ত দেহ ৷ খুনের অভিযোগ তুলে শাস্তিস্বরূপ চুল কেটে স্ত্রীকে হেনস্থা গ্রামবাসীদের ৷ কোলাঘাটের কাঁউরচণ্ডী গ্রামের ঘটনা ৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ ৷

Kolaghat
যুবতির চুল কেটে শাস্তি গ্রামবাসীদের

By

Published : Jul 23, 2020, 4:29 PM IST

Updated : Jul 23, 2020, 6:04 PM IST

কোলাঘাট, 23 জুলাই : ঘর থেকে উদ্ধার যুবকের ঝুলন্ত দেহ ৷ আর সেই ঘটনায় তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুলে চুল কেটে নিল গ্রামবাসীরা ৷ ঘটনাটি কোলাঘাটের কাঁউরচণ্ডী গ্রামে ৷ মৃতের নাম সুব্রত দাস(29) ৷ পুলিশ খবর পেয়ে মৃতের স্ত্রী সুপর্ণাকে উদ্ধার করতে গেলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে ৷ পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে গ্রামবাসীরা ৷ পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করা হয় ৷ এখনও এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে ৷ বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেটও ৷

ছয় বছর আগে কাঁউরচণ্ডী গ্রামের সুব্রত দাসের সঙ্গে গোবরা গ্রামের সুপর্ণা দাসের বিয়ে হয় ৷ তাঁদের তিন বছরের একটি পুত্র সন্তানও রয়েছে ৷ অভিযোগ, সম্প্রতি সুব্রত মদ খেয়ে এসে মারধর করতেন সুপর্ণাকে ৷ তারপর থেকেই দু'জনের দাম্পত্য জীবনে অশান্তি শুরু হয় ৷ গ্রামে একাধিকবার সালিশি সভা বসিয়ে দু'জনের অশান্তির মিটমাট করানো হয়েছে ৷ কিন্তু গত রাতে ফের সুব্রত মদ খেয়ে সুপর্ণাকে মারধর করেন বলে অভিযোগ ৷

সুপর্ণা জানান, অশান্তির পর শাশুড়ির সঙ্গে বারান্দায় ঘুমোতে যান তিনি ৷ আর ঘরেই ঘুমোন সুব্রত ৷ পরে মাঝরাতে শাশুড়ির ডাকে ঘুম ভাঙে তাঁর ৷ দেখেন, ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে সুব্রত ৷ সঙ্গে সঙ্গে শাশুড়ির সাহায্যে সুব্রতকে নামান ৷ তারপর গ্রামবাসীদের ডাকাডাকি করেন ৷ কিন্তু কেউ সাড়়া না দেওয়ায় পুলিশে খবর দেন তাঁরা ৷ পুলিশ এসে রাতের অন্ধকারেই দেহ নিয়ে চলে যায় ৷ আর এতেই আপত্তি গ্রামবাসীদের ৷ তাদের অভিযোগ, কীভাবে গ্রামের কাউকে না জানিয়ে রাতের অন্ধকারে দেহ নিয়ে চলে গেল পুলিশ ৷ এরপরই আজ সকাল থেকে সুপর্ণাকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে গ্রামবাসীরা ৷ তাঁর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুলে চুল কেটে নেওয়া হয় ৷

যুবতির চুল কেটে শাস্তি কোলাঘাটে

পরে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থানে এলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয় ৷ পুলিশকে দেখে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে গ্রামবাসীরা ৷ পুলিশের সামনে গ্রামবাসীরা বার বার অভিযোগ তুলতে থাকে, সুব্রতকে খুন করেছেন সুপর্ণা ৷ স্থানীয় বাসিন্দা অমল মাইতি অভিযোগ করেন, "দু'জনের মধ্যে প্রতিনিয়ত দাম্পত্য কলহ লেগেই ছিল । তিনদিন আগেও আমরা গ্রামবাসীরা বসে মিটমাট করিয়েছি । রাতের অন্ধকারে গ্রামবাসীদের কাউকে না জানিয়ে কীভাবে পুলিশ দেহ নিয়ে চলে? স্থানীয়রা কেউ জানতেই পারল না । আমরা নিশ্চিত সুপর্ণাই সুব্রতকে খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছে । আমরা চাই পুলিশ প্রকৃত ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দিক ।" গ্রামবাসীদের নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ ৷ তারপর উদ্ধার করে সুপর্ণাকে ৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখনও উত্তেজনা রয়েছে কাঁউরচণ্ডী গ্রামে ৷ বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেট ৷

গ্রামবাসীদের সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সুপর্ণা ৷ তিনি বলেন, " স্থানীয় বাসিন্দাদের বার বার ডাকলেও তারা কেউ এগিয়ে আসেনি । বাধ্য হয়ে পুলিশে খবর দিলে রাতে পুলিশ মৃতদেহ নিয়ে যায় । এটাই আমার ভুল ৷ আমি জানতাম না এত বড় ঘটনা ঘটে যাবে । আমি কোনও খুন করিনি । আমি দোষী হলে নিশ্চিত আমার শাস্তি হবে ।"

এই বিষয়ে তমলুকের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অতীশ বিশ্বাস জানিয়েছেন, পরিবারের তরফে খবর পেয়ে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য তমলুক জেলা হাসপাতালে পাঠিয়েছে । কারও কোনও অভিযোগ থাকলে তা অবশ্যই পুলিশের কাছে দায়ের করা উচিত ছিল । যে নিন্দনীয় ঘটনা ঘটনা হয়েছে তা কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না । এলাকার পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে । ঘটনায় সাত জনকে আটক করা হয়েছে ৷

Last Updated : Jul 23, 2020, 6:04 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details