পটাশপুর, 19 সেপ্টেম্বর : পটাশপুরে বন্যা পরিস্থিতির বেশ খানিকটা উন্নতি হয়েছে শনিবার । তবে ভগবানপুর-১ ব্লকের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে । কেলেঘাই নদীর বাঁধ ভাঙনের ফলে জলের তোড়ে পটাশপুর-1 নং ব্লকের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে ৷ ভগবানপুর-1 নং ব্লকের বিভীষণপুর বাজার, তালতলা বিদ্যুৎ সাব স্টেশন ডুবে গিয়েছে ৷
কেলেঘাই নদীর জল ভগবানপুর, বেউদিয়া, কাজলাগড় প্রভৃতি অঞ্চলে ঢুকে বন্যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে । তবে এগরা, পটাশপুরের দুর্গত এলাকা থেকে জল নামতে শুরু করেছে । আরও অন্তত 2-3 দিন জল-দুর্ভোগ অব্যাহত থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে ।
পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর-1 ও ভগবানপুর-1 নং ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে । পানীয় জলের চরম সঙ্কট দেখা দিয়েছে । সাধারণ মানুষের যাতে কোনও অসুবিধে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে প্রশাসনের তরফ থেকে । সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে বেশ কয়েকটি ত্রাণ শিবির চালু হয়েছে ৷
আরও পড়ুন : Flood : কেলেঘাই নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত পূর্ব মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা
শনিবার পটাশপুর 1 নং ব্লক এলাকায় রামকৃষ্ণ মিশনের উদ্যোগে 5 হাজার মানুষের হাতে রান্না করা খাবার তুলে দেওয়া হয়েছে ৷ আরও 5 হাজার মানুষের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে । এদিন পটাশপুর 1 নং ব্লকের গোপালপুর পঞ্চায়েত-সহ বিভিন্ন জলমগ্ন এলাকাগুলো পরিদর্শনে যান পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম বারিক । পাশাপাশি শুকনো খাবার ও রান্না করা খাবার বিলি করেন বিধায়ক । কখনও বাইকে, কখনও ট্রাকে, কখনও বা স্পিড বোটে রান্না করা খাবার, শুকনো খাবার, জল-সহ অন্য সামগ্রীক নিয়ে পৌঁছে দিলেন প্লাবিত এলাকার মানুষের কাছে ।
সাংবাদিকদের তিনি জানান, আপাতত বহু মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৷ তাঁদের জন্য খাবার, পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে । ব্লকের 55 হাজার পরিবারের মধ্যে 10 হাজার মানুষের পাকা বাড়ি আছে ৷ শুধুমাত্র তাঁরাই নিরাপদ, বাকি 45 হাজার মানুষ বিপন্ন ৷
বন্যাদুর্গত এলাকা নিজে ঘুরে দেখলেন তৃণমূল বিধায়ক উত্তম বারিক, খাবার পৌঁছালেন রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজ এদিন রামকৃষ্ণ মিশনের তরফে মহারাজ স্বামী সর্বপানন্দ বলেন, "পটাশপুর 1 নং ব্লকে দুপুরের খাবার ব্যবস্থা করা হয়েছিল ৷ গতকাল আমরা সাড়ে 4 হাজার মানুষকে শুকনো খাবার দিয়েছি ৷ আজ যে সব জায়গায় খাবার পৌঁছানো যায়নি, সেখানেও শুকনো খাবার গিয়েছে ৷" এছাড়া পটাশপুরে বাল্যগোবিন্দপুরে 2 হাজার 500 জন মানুষের জন্য শুকনো খাবার পাঠানো হয়েছে বলে জানালেন তিনি ৷ আজ থেকে সেখানে 1 হাজার লোকের রান্নার ব্যবস্থা হওয়ার কথা ৷ ভগবানপুর 1 নং ব্লকের বিডিও-র সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানালেন রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজ ৷ ওখানেও ক্যাম্প চালু হওয়ার কথা ৷ আর যতদিন না পর্যন্ত জল নামছে বন্যাদুর্গত এলাকাগুলিতে আরও বেশি করে রান্না করা খাবার, শুকনো খাবার পৌঁছানোর কাজ চলবে বলে জানালেন মহারাজ ৷