হলদিয়া, 5 এপ্রিল : কোরোনা আতঙ্কে আজও হলদিয়া বন্দরে কাজে যোগ দিলেন না ম্যানুয়াল হ্যান্ডেলিংয়ের কর্মীরা। 30 তারিখে নিজ়ামউদ্দিনের ধর্মীয় অনুষ্ঠান থেকে ফিরে কাজে যোগ দিয়েছিলেন বন্দরের এক ইঞ্জিনিয়ার। 2 এপ্রিল রাতে জানা যায়, তিনি কোরোনায় আক্রান্ত। পরের দিন বিষয়টি জানতে পেরে আতঙ্কে বন্দরের ম্যানুয়াল হ্যান্ডেলিং বিভাগের সমস্ত কর্মী কাজ ছেড়ে পালিয়ে যান। ফলে, পুরোপুরি স্তব্ধ হয়ে যায় বন্দরের পণ্য লোডিং আনলোডিংয়ের কাজ। পরে আবেদন জানানো হলেও কর্মীরা কাজে যোগ দেননি। যার ফলে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় হলদিয়া বন্দরকে। সেই আতঙ্ক কাটিয়ে পুনরায় কর্মীদের কাজে যোগ দেওয়াতে ইতিমধ্যেই গোটা বন্দরের অফিস ও বার্থ চত্বর স্যানিটাইজ় করার কাজ শুরু করেছে হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, হলদিয়া বন্দরের কর্মরত ইঞ্জিনিয়ার 23 মার্চ নিজ়ামউদ্দিন থেকে হলদিয়ার আবাসনে ফেরেন। 25 মার্চ হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে নিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান। চিকিৎসকের পরামর্শে তাঁর 14 দিনের হোম কোয়ারানটাইনে থাকার কথা ছিল। কিন্তু সেই নিষেধকে অমান্য করে তিনি 30 মার্চ বন্দরে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। পরে তিনি কোরোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর চাউর হতেই বন্দরের কাজ ফেলে পালিয়ে যান কর্মীরা। কর্তৃপক্ষের তরফে তাঁদের বারবার কাজে যোগ দেওয়ার আর্জি জানানো হলেও কেউই কাজে যোগ দেননি।
এরপর কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের নির্দেশে গোটা হলদিয়া বন্দরের অফিস, ক্যান্টিন থেকে শুরু করে বেশ কয়েকটি বার্থ স্যানিটাইজ় করার কাজ শুরু করা হয়। অপরদিকে যে অফিসে কোরোনা আক্রান্ত ইঞ্জিনিয়ার সেদিন এসেছিলেন সেই অফিসের সব কর্মীর শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসকরা ইতিমধ্যেই 3 আধিকারিককে বন্দরের আইসোলেশন বিভাগে ভরতি করেছেন। বাকি 11 আধিকারিককে বর্তমানে হোম কোয়ারানটাইনে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। ফলে , কর্মীদের মনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। সেই ভয়-ভীতিকে কাটিয়ে হলদিয়া বন্দরকে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরিয়ে আনতে স্যানিটাইজ় করার কাজ শুরু হয়। অপরদিকে কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের তরফ থেকে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে সমস্ত রকম নিরাপত্তাজনিত সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে কর্মীদের কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
হলদিয়া বন্দরের জেনেরাল ম্যানেজার (ট্র্যাফিক) অভয় মহাপাত্র জানিয়েছেন, আতঙ্কের কারণে ম্যানুয়াল হ্যান্ডেলিং এর কোনও কর্মী কাজে যোগ দেননি। যে ব্যক্তি কোরোনায় আক্রান্ত হয়েছেন CCTV ফুটেজ খতিয়ে দেখে জানা গেছে তিনি সরাসরি কোনও কর্মীর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেননি। বন্দরের নিয়ম অনুযায়ী সেদিন তিনি মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করেই ভেতরে প্রবেশ করার অনুমতি পেয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও আমরা সমস্ত রকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। আশা করি, এই ব্যবস্থাপনা দেখে কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক কেটে আস্থা ফিরে আসবে। খুব শীঘ্রই তাঁরা কাজে যোগ দেবেন।