পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

কোরোনা আতঙ্কে হলদিয়া বন্দরে বিশেষ নজরদারি, বন্ধ বায়োমেট্রিক পদ্ধতি - হলদিয়া বন্দর

আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত হলদিয়া বন্দরের সকল স্থায়ী কর্মী বায়োমেট্রিক সিস্টেমের পরিবর্তে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরের মাধ্যমে উপস্থিতি জানাবেন ৷ বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত মেডিকেল টিম হলদিয়াতে আসা জাহাজের নাবিকসহ প্রত্যেক কর্মীকে থার্মোস্ট্যাগ মেশিনের দ্বারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে । কোরোনার মোকাবিলায় সতর্কতা হিসেবে এমনই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ ৷

Haldia dock takes special precaution over Corona
কোরোনা আতঙ্কে হলদিয়া বন্দরে বিশেষ নজরদারি

By

Published : Mar 7, 2020, 6:40 PM IST

হলদিয়া, ৭ মার্চ : কোরোনা ভাইরাস নিয়ে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি সতর্কতামূলক সিদ্ধান্ত নিয়েছে হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষ । এবার কেন্দ্রের নির্দেশে আরও একধাপ এগিয়ে বায়োমেট্রিক সিস্টেমের মাধ্যমে কর্মীদের উপস্থিতি বন্ধ করল । আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্দরের সকল স্থায়ী কর্মী হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরের মাধ্যমে তাঁদের উপস্থিতি জানাবেন ৷ এমনই জানানো হয়েছে হলদিয়া বন্দরের তরফে ।

বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল বিকেল থেকে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে কর্মীদের উপস্থিতি প্রদান প্রক্রিয়া পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । মেশিনের উপর লাল সেলোটেপ আটকে দেওয়া হয়েছে যাতে কোনও কর্মী এই সিস্টেম ব্যবহার করতে না পারেন । বদলে নতুন করে হাজিরা খাতা তৈরি করে সেখানে কর্মীদের স্বাক্ষর করানো হচ্ছে উপস্থিতির । যা পুরোপুরি কেন্দ্রের জারি করা নির্দেশে কার্যকর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বন্দরের আধিকারিকরা । ইতিপূর্বে হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষের হাসপাতালে চালু করা হয়েছিল আইসোলেশন বিভাগ । বিশেষ ট্রেনিং দিয়ে মেডিকেল টিম তৈরি করে বন্দরে আসা প্রতিটি জাহাজের নাবিক ও কর্মীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে । কারও মধ্যে কোরোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা গেলে তাঁকে তৎক্ষণাৎ বন্দরে নিজস্ব হাসপাতলে রেখে চিকিৎসা করা হবে । পরে অবস্থা বুঝে রোগীকে স্থানান্তরিত করা হবে বেলেঘাটা ID হাসপাতালে ।

বন্ধ বায়োমেট্রিক পদ্ধতি

বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বর্তমানে হলদিয়াতে আসা প্রতিটি জাহাজকেই প্রথমে দাঁড় করানো হচ্ছে সাগরে । সেখানেই ছোটো বোটের মাধ্যমে পৌঁছে যাচ্ছে বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত মেডিকেল টিম । জাহাজের নাবিকের কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়া হচ্ছে তাঁর জাহাজে কোরোনা আক্রান্ত কোনও রোগী রয়েছে কি না । তারপরই জাহাজের নাবিকসহ প্রত্যেকটি কর্মীকে থার্মোস্ট্যাগ মেশিনের দ্বারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে । দেখা হচ্ছে তাদের শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে কি না । তারপর উপযুক্ত পোশাক পরা প্যারামেডিকেল সদস্যরা সেই জাহাজ বন্দরে ঢোকার অনুমতি দিলে বন্দরের অভিমুখে যাচ্ছে জাহাজগুলি । গতকালই সিঙ্গাপুর ও চিন থেকে দু'টি জাহাজ এসে পৌঁছায় হলদিয়া বন্দরে । জাহাজের সমস্ত কর্মীদের পরীক্ষা করার পর বন্দরে ঢুকতে দেওয়া হয় ।

এ বিষয়ে হলদিয়া বন্দরের জেনেরাল ম্যানেজার অমল দত্ত বলেন, ইতিমধ্যে হলদিয়া বন্দরে আসা বিভিন্ন দেশের জাহাজে নিযুক্ত কর্মী ৫৫২০ জনের শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে । যদিও তাঁদের মধ্যে শরীরে কোরোনার সংক্রামক পাওয়া যায়নি । বায়োমেট্রিক সিস্টেমের মেশিনে একাধিক মানুষ একই জায়গায় স্পর্শ করেন । তাই আক্রান্ত রোগী সেখানে স্পর্শ করার পর অন্য কেউ তা স্পর্শ করলে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে । যে কারণেই কেন্দ্রের তরফে পাঠানো নির্দেশিকা মেনে বন্দরে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে উপস্থিতি প্রদান চলতি মাসের 31 তারিখ পর্যন্ত বন্ধ রাখা হবে । বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, চিন এবং সিঙ্গাপুর থেকে আসা জাহাজগুলিতে সতর্কতার সাথে বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে । ভালোভাবে কর্মীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরেই সেই জাহাজকে বন্দরে ঢোকানো হচ্ছে । তবে চিন থেকে কোনও জাহাজ বন্দরে ভিড়েছে খবর ছড়িয়ে পড়লেই খালাসিরা রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন । এমনকী তাঁদের কাজ করানোর জন্য বন্দরে মোতায়েন থাকা বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত মেডিকেল টিমকে বারবার বোঝাতে হচ্ছে। ফলে জাহাজে থাকা পণ্য দ্রুত খালি করার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details