কাঁথি, 22 জানুয়ারি : আহত প্রবীণকে বাঁচাতে গিয়ে আর পরীক্ষায় বসা হয়নি অলিদের । অনেকদিনের প্রস্তুতি ছিল । তাই পরীক্ষা না দিতে পারায় খারাপ লাগাটাও স্বাভাবিক । তবে নুরজামানের বাড়ি গিয়ে তাঁকে সুস্থ দেখে সেই ক্ষতে প্রলেপ পড়েছিল তাঁর । নিজেকে বুঝিয়েছিলেন, আবার যখন পরীক্ষা হবে তখন দেখা যাবে । তবে, চাকরির পরীক্ষা দিতে না পারলে কী হবে, মানবিকতার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ অলিদের জন্য অপেক্ষা করছিল অন্যকিছু । তাই হল । 27 জানুয়ারি কলেজ সার্ভিস কমিশনের তরফে ডেকে পাঠানো হয়েছে তাঁকে ।
সেদিন রাস্তার পাশে অসহায়, আহত প্রবীণকে দেখে নিজেকে আটকাতে পারেননি অলিদ । বাকিদের মতো পাশ কাটিয়ে চলে যেতে পারেননি । প্রবীণকে কোলে তুলে প্রায় হাফ কিলোমিটার পথ হেঁটে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভরতি করেন । পরে পরীক্ষাকেন্দ্রে যখন পৌঁছান, ততক্ষণে প্রায় আধঘণ্টা হয়ে গেছে পরীক্ষা । কলেজের নিরাপত্তারক্ষীদের বারবার পরিস্থিতির কথা বুঝিয়েও কোনও লাভ হয়নি । আর বসা হয়নি পরীক্ষায় । সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে বুঝিয়েছেন । ফোন করে নুরজামানকে দেখতে তাঁর বাড়ি পৌঁছে যান । তাঁকে সুস্থ দেখে, মুখে হাসি দেখে কোথাও যেন একটা আলাদা আনন্দ, সার্থকতার স্বাদ পান অলিদ । নিজেকে বোঝান পরেরবার ভালো কিছু হবে । সাফল্য নিশ্চিত আসবে ।
সোশাল মিডিয়ার দৌলতে দ্রুত ছড়িয়ে যায় অলিদের খবরটা । তার জেরেই এবার কলেজ সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান দীপক কর ডেকে পাঠিয়েছেন তাঁকে । গতকাল দুপুরে কলেজ সার্ভিস কমিশন থেকে অলিদকে ফোন করা হয় । 27 জানুয়ারি দুপুর 1 টার সময় চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করার কথা তাঁর । দেরিতে পৌঁছানোর জন্য পাঁশকুড়া বনমালী কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেওয়া হয়নি তাঁকে । ফোন আসে সেই কলেজের অধ্যক্ষ নন্দন ভট্টাচার্যের তরফেও । অনুতপ্ত অধ্যক্ষ । জানান, নিয়মের কারণে হাত-পা বাঁধা । তাই আর পরীক্ষায় বসার সুযোগ করে দিতে পারেননি তিনি । কিন্তু অলিদকে কুর্নিশ জানাতে কলেজ সার্ভিস কমিশনের নির্দেশে ফোন করেছেন তিনি ।