কলকাতা ও মেদিনীপুর, 21 মার্চ : তপ্ত হচ্ছে রাজনীতির ময়দান ৷ প্রথম দফার ভোট শুরু হতে বাকি আর মাত্র এক সপ্তাহ ৷ আর ভোটের মুখে সবুজ-গেরুয়া দুই শিবিরই এখন উঠে পড়েছে মেদিনীপুর লোকালে ৷ রবিবাসরীয় মেদিনীপুর আজ যেন দুই ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে ৷ যেন জোড়াফুল আর পদ্মফুলের এক অদৃশ্য বেড়াজাল ৷ কেউ কাউকে এক বিন্দুও পায়ের তলার মাটি ছাড়তে নারাজ ৷
একদিকে এগরায় সভা করলেন শাহ ৷ পাল্টা সভা মমতারও ৷ একটি নয় ৷ একাধিক ৷ প্রথমটি দক্ষিণ কাঁথির কেওড়ানালায় ৷ দ্বিতীয়টি উত্তর কাঁথিতে ৷ আর সব শেষে নন্দকুমারে ৷ চলল আক্রমণ, প্রতি-আক্রমণের পালা ৷ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করছেন, বর্তমান রাজ্য রাজনীতির যা বাতাবরণ তাতে নীলবাড়ির কুর্সি দখলের লড়াইয়ে দুই মেদিনীপুরই বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে ৷ আর অখণ্ড মেদিনীপুরের ভোট কোনদিকে পড়বে, তার অনেকটাই আবর্তিত হচ্ছে নন্দীগ্রামকে ঘিরে ৷
নিঃসন্দেহে এবারের ভোটে সব থেকে হাইভোল্টেজ কেন্দ্র নন্দীগ্রাম ৷ একদিকে মমতা ৷ আর উল্টো দিকে তাঁর একসময়ের বিশ্বস্ত সেনাপতি শুভেন্দু ৷ নন্দীগ্রামে প্রতি মুহূর্তে বদলাচ্ছে রাজনৈতিক সমীকরণ ৷ আজ যখন নেত্রী মেদিনীপুরকে গদ্দারমুক্ত করার ডাক দিচ্ছেন, তখন অমিত শাহর পদ্মমঞ্চে দেখা মিলল শিশিরের ৷ জল্পনা ছিল অনেকদিন ধরেই ৷ অবশেষে বিজেপির সভায় দেখা মিলল তাঁর ৷ বিজেপির হয়ে দু'চারটে কথাও বললেন ৷ প্রকাশ্যে জানিয়ে দিলেন, অধিকারী পরিবার দিলীপ-কৈলাসদের পাশেই থাকবে ৷
আরও পড়ুন : দু-আড়াই মাস ধরে মানসিক নির্যাতন চলছে, তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক শিশির
নন্দীগ্রাম মানেই অধিকারী গড় ৷ শুধু নন্দীগ্রাম নয়, গোটা জেলাটাই শুভেন্দুদের মুক্তাঙ্গন ৷ বাংলার সবথেকে হেভিওয়েট রাজনৈতিক পরিবার হিসেবে মমতা-অভিষেকের সঙ্গে সঙ্গেই অধিকারী পরিবারেরও নামডাক রয়েছে ৷ এই পরিস্থিতিতে নন্দীগ্রামে মমতা বনাম শুভেন্দু ৷ একদিকে নেত্রী আর একদিকে পুরানো সেনাপতি ৷ স্বাভাবিকভাবেই স্নায়ুর চাপে রয়েছে উভয় পক্ষই ৷
তাই আজ অধিকারী গড়ে ঢুকেই নাম না করে তাঁদের নিশানা করলেন নেত্রী ৷ আনলেন একের পর এক অভিযোগ ৷ একটা সময় নাকি মমতাকেও কাঁথি, এগরা, পটাশপুরে সভা করতে দেওয়া হত না ৷ কারণ, সেখানে নাকি একটি পরিবারেরই জমিদারি চলত ৷ তাদের যাঁকে পছন্দ হত না, তাঁদের এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হত না ৷ নির্বেদ রায়ের হারের পিছনেও নাম না করা সেই জমিদারি পরিবারের হাত ছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি ৷