পাঁশকুড়া, 11 অক্টোবর : মত্ত অসুস্থ যুবতীকে কোরোনা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভরতি করার চেষ্টা । বাঁধা দেওয়ায় হাসপাতালে ব্যাপক ভাংচুর । আক্রান্ত দুই চিকিৎসক। রবিবার গভীর রাতে পাঁশকুড়া কোরোনা হাসপাতালের ঘটনাটি ঘটে । পাঁশকুড়া থানার বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থানে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে । ঘটনায় জড়িত 4 জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ।জানা গিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে কলকাতার 3 জন ও পাঁশকুড়ার 1জন রয়েছে ।
পুলিশ সূত্রের খবর, গতকাল পাঁশকুড়ার একটি অতিথি নিবাস অন্নপ্রাশন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন কলকাতার একটি দল । অনুষ্ঠান শেষে তাঁরা সেখানে একটি মদের আসর বসায়। আসরে অতিরিক্ত মদ্যপানের জেরে বছর 26 এর এক যুবতী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন । অসুস্থ ওই যুবতীর চিকিৎসা করাতে পৌঁছে যান কোরোনা হাসপাতালে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়ে দেন, কোরোনা হাসপাতলে ভরতি নেওয়া সম্ভব নয় রোগীকে । এরপরেই শুরু হয় বচসা ।
অভিযোগ, হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীকে মারধর করেই অসুস্থ রোগীকে নিয়ে চলে যান সোজা তিনতলায় ICU এর সামনে । পরে চিকিৎসকরা চিকিৎসা করতে রাজি না হওয়ায় তাঁদের উপরেও চড়াও হয় । মারধর করে কর্তব্যরত চিকিৎসককে। ভেঙে ফেলা হয় হাসপাতালের একাধিক আসবাবপত্র ।
খবর পেয়েই ঘটনাস্থানে পৌঁছায় পাঁশকুড়া থানার পুলিশ । এরপরেই পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কোরোনা হাসপাতাল থেকে থেকে পুলিশের তরফে দ্রুত বাইরে বেরিয়ে আসার অনুরোধ জানানো হয় । এরপরেই হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসেন অভিযুক্তরা । ঘটনায় 4জনকে আটক করে পুলিশ ।
অপরদিকে, হাসপাতালের ভেতর ভাঙচুর হওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন রোগীরা ।
এ বিষয়ে পাঁশকুড়া কোভিড হাসপাতালের টেকনিক্যাল হেড দেবোপম হাজরা বলেন, " রাত বারোটা নাগাদ 10 থেকে 12 জনের একটি দল হঠাৎই নিরাপত্তারক্ষীকে মারধর করে হাসপাতালের ভেতরে প্রবেশ করে । প্রত্যেকেই মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন । কোভিড হাসপাতালে একজন সাধারণ রোগীকে ভরতি নেওয়া যায় না । যে কারণে আমরা আপত্তি জানিয়েছিলাম । কিন্তু নেশার ঘোরে তারা সেটুকু বোঝার মতো অবস্থায় ছিলেন না । চিকিৎসা করতে রাজি না হওয়ায় দুই চিকিৎসককে মারধর করেছে । পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গভীর রাতে এ ধরনের ঘটনায় চিকিৎসক থেকে নার্স সবাই আতঙ্কিত । আমরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি। পুলিশ এসে কয়েকজনকে ধরেছে । "
পাঁশকুড়া থানার OC অজয় মিশ্র বলেন, "হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই চার যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে । আটক করা হয়েছে তাদের একটি গাড়িও । হাসপাতালের সামনে চব্বিশঘন্টার একটি পুলিশ ক্যাম্প রয়েছে তারাই প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে । ভবিষ্যতে ক্যাম্পে নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে । বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে ।"