তেড়ে গেলেন তৃণমূল বিধায়ক ভাতার, 17 মে:অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের রোড-শোয়ের মাঝেই রেগে লাল দলেরই বিধায়ক ৷ এমনই রেগে অগ্নিশর্মা হয়ে গেলেন বিধায়ক, যে পরিবেশ-পরিস্থিতি সম্পর্কে কোনও হুঁশই থাকল না তাঁর ৷ এমনকী রেগে রাস্তাতেই তৃণমূল কর্মীদের উদ্দেশে ঘুষি পাকিয়ে ছুঁটে যেতেও দেখা গেল বিধায়ককে ৷ তেড়ে গিয়ে বেশ কয়েকবার ওই তৃণমূল কর্মীকে চড়ও মারেন বিধায়ক ৷
তখন কাতারে কাতারে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা কার্যত ঠেলাঠেলি করে এগিয়ে চলেছেন। সেই ভিড়ের মধ্যেই প্রচণ্ড রাগে হাতের ঘুষি পাকিয়ে এক তৃণমূল কর্মীর মুখে ঘুষি মারার চেষ্টা করতে দেখা গেল খোদ দলেরই বিধায়ককে ৷ শুধু তাই নয়, মিছিলেই এক কর্মীকে চড়-থাপ্পড়ও মারতে দেখা যায়। যিনি ঘুষি চড় থাপ্পড় মারছেন তিনি আর কেউ নন, ভাতারের তৃণমূল বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী। পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক ৷ তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, এমনিতেই বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী গোষ্ঠীর সঙ্গে ভাতারের ব্লক সভাপতি বাসুদেব যশের কোন্দল চরমে। অভিযোগ গত সোমবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের রোড-শোয় লোক আনাকে কেন্দ্র করেই ঘটনার সূত্রপাত। বিধায়ক যতজন লোক আনার জন্য বলেছিলেন সেই পরিমাণ লোক না-আসাতেই রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে ওঠেন বিধায়ক ৷ এমনকী এক কর্মী তাঁকে থামাতে গেলে উলটে সেই কর্মীর দিকেই ঘুষি পাকিয়ে তেড়ে যান বিধায়ক ৷ অভিযোগ ওই কর্মীকে বিধায়ক মেরেছেন।
তৃণমূল স্থানীয় কর্মীদের অভিযোগ, নির্বাচনের সময় যেসব কর্মীদের হাত ধরে তিনি বিধায়ক হলেন আজ আর তাদের কোনও গুরুত্ব নেই। উলটে সিপিএম ও বিজেপি থেকে আসা নেতা কর্মীরাই আজ ছড়ি ঘোরাচ্ছে দলে। যা নিয়ে গোষ্ঠী কোন্দল ক্রমে বেড়েই চলেছে এলাকায়। অন্যদিকে তৃণমূল বিধায়কের এই মারমুখী অবস্থার ঘটনায় রীতিমতো বিতর্ক শুরু হয়েছে। দলীয় কর্মীদের মতে, বিধায়ক কর্মীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। ফলে ওই বিধায়কের ব্যবহারের জন্য কর্মীরা দলের হয়ে আর কাজ করতে চাইছেন না। এদিকে বর্তমান বিধায়কের থেকে অভিষেকের ওই রোড-শোয় বেশি লোক নিয়ে গিয়েছিলেন প্রাক্তন বিধায়ক বনমালী হাজরা। যা নিয়ে বিধায়ক নিজস্ব মহলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বলেও খবর ৷ তৃণমূল বিধায়কের এই ব্যবহারের সমালোচনা করেন বিজেপি নেতা সুধীররঞ্জন সাউ ৷ তিনি বলেন, "তৃণমূল বিধায়ক তাঁর নিজের দলের কর্মীদের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন। তাঁর দলের কর্মীরাও তাঁর ব্যবহার মেনে নিতে পারছেন না। বিধায়কের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগও আছে।"
এমনিতেই তৃণমূল কংগ্রেসের দলের প্রতি মানুষের আস্থা কমতে শুরু করেছে বলে দাবি বিজেপির। এখন কর্মীদের আস্থাও হারাচ্ছে তারা। বিজেপি নেতার দাবি, তৃণমূল দলে তাদের কর্মীদেরই কোনও মানসম্মান নেই। এটা লজ্জার বিষয় বলেও জানান তিনি। জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, "ঘটনার কথা শুনেছি। তবে ভিডিও যে কেউ ভাইরাল করতেই পারেন। কিন্তু ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করা দরকার। তাই না জেনে কী ঘটেছে বলা সম্ভব নয়।"
আরও পড়ুন: বুথ সভাপতি কারা, অভিষেক বড় দায়িত্ব দেওয়ার পর প্রশ্ন তৃণমূলের অন্দরেই