বর্ধমান, 22 ডিসেম্বর: রাজ্য সরকারের 4 শতাংশ মহার্ঘ ভাতা তথা ডিএ ঘোষণা নিয়ে ডান-বামের তরজা তুঙ্গে । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ঘোষণাকে একদিকে যেমন তৃণমূল প্রভাবিত রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশন
নতুন বছরের উপহার বলে দাবি করছেন সেখানে বাম কর্মচারী ইউনিয়ন রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটি বাকি ডিএ আদায়ের দাবিতে ফের পথে নামার হুঁশিয়ারি দিচ্ছে ।
শুক্রবার দুপুরে বর্ধমান সদর মহকুমাশাসকের অফিসের সামনে রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটি বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে । ঠিক তাদের পাশেই জড়ো হয়ে সরকারের নামে জয়ধ্বনি দিতে শুরু করে রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের কর্মীরা । যা নিয়ে শুরু হয় রাজনৈতিক কাজিয়া ।
বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির দাবি ডিএ সরকারী কর্মচারীদের নৈতিক অধিকার । অথচ রাজ্য সরকার 4 শতাংশ ডিএ ঘোষণা করে তাদের দয়া দাক্ষিণ্য দেখাচ্ছে । 4 শতাংশ দেওয়ার পরেও বকেয়া রয়েছে আরও 36 শতাংশ । অথচ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা এখন 46 শতাংশ হারে ডিএ পায় । অথচ ষষ্ঠ বেতন কমিশন চালু হওয়ার পরে রাজ্য সরকারী কর্মচারীদের ডিএ-র পরিমাণ 10 শতাংশ ।
যদিও রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশন পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির মতে, মুখ্যমন্ত্রী তাদের পাশে দাঁড়িয়ে 4 শতাংশ ডিএ দেওয়ায় তারা খুশি । কেন্দ্র যেভাবে এই রাজ্যের সঙ্গে বিমাতৃসুলভ আচরণ করছে সেই অবস্থায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী যে আমাদের কথা ভেবেছেন সেই জন্য তারা আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ ।
এই বিষয়ে রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির প্রাক্তন সম্পাদক করালী চট্টোপাধ্যায় বলেন, "ডিএ সরকারের দয়ার দান নয় । কর্মচারীরা 40 শতাংশ মহার্ঘভাতা নিয়ে লড়াই করছে । অথচ সরকারের তোষামোদকারী কিছু মানুষ আছে যারা তোষামোদ করা ছাড়া অন্য কোনও কাজ করে না । আমাদের কাজ কর্মচারীদের স্বার্থ রক্ষা করা । বিপুল পরিমাণ পেনশন হোল্ডার আছেন যারা পরিবার নিয়ে সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছেন । এই অবস্থায় চার শতাংশ ডিএ বাড়ানো মানে তাদের কিছুই হবে না । কারণ যারা পেনশনভোগী তাদের এতে দু-পাঁচশো টাকা বাড়বে । সেই টাকায় তাদের কি লাভ হবে ? তাই 4 শতাংশে আমরা ভুলছি না । আমরা 40 শতাংশই আদায় করে ছাড়ব । আগামী দিনে প্রশাসনকে ঘেরাও করে দাবি জানাব ।"
রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশন পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির সভাপতি বিশ্বজিৎ সাঁই বলেন, "আরও বেশি ডিএ পেলে আমরাও অনেক বেশি খুশি হতাম । কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের বিপুল অংকের টাকা বকেয়া রয়েছে । সেখানে কেন্দ্র রাজ্যের সঙ্গে বিমাতৃসুলভ আচরণ করছে । সরকারের আর্থিক সংকট রয়েছে । কিন্তু এতকিছুর পরেও মুখ্যমন্ত্রী এতটাই মানবিক যে, যেসব প্রকল্প সাধারণ মানুষের জন্য তিনি ঘোষণা করেছেন সেই সব প্রকল্প সবই চালু রেখেছেন । যারা বলছেন খুশি নয় তারা তো আদালতে কেস করেছেন । কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট আজ পর্যন্ত রায় ঘোষণা করেনি । এক্ষেত্রে রাজ্য সরকারও সিদ্ধান্ত নিতে পারত যে আদালতে সমস্যা না মেটা পর্যন্ত কোনও ডিএ দেওয়া হবে না । কিন্তু আমাদের ফেডারেশনের আবেদনে সাড়া দিয়ে চরম আর্থিক সংকটের মধ্যেও তারা ডিএ ঘোষণা করেছে । আর যারা মনে করছে এই ডিএ নেওয়া ভিক্ষার সমান তাহলে তাদের উদ্দেশ্যে বলব টিআর ফর্ম ফিলাপ করে সেই টাকা ফেরত দিয়ে প্রতিবাদ জানাক ।"