বর্ধমান, 31 জুলাই : বর্ধমান মহারাজার আমলে নাম ছিল শূলী পুকুর । তৃণমূল কংগ্রেসের শাসনকালে তা বদলে হল "জীবন-সায়র" । শুক্রবার বিকেলে "জীবন-সায়র"-এর উদ্বোধন করলেন বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান ডঃ রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় । উপস্থিত ছিলেন বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক খোকন দাস, জেলা পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন-সহ অন্য়রা ।
ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যবাহী পুকুরের নাম পরিবর্তন কেন ?
ইতিহাস বলছে, বর্ধমান মহারাজার আমলে যারা দস্যুবৃত্তির সঙ্গে যুক্ত থাকত, তাদের শাস্তি দিতে রাজবাড়ি থেকে কয়েক হাত দূরে একটা শূল রাখা হয়েছিল । ওই শূলকে ঘিরে একটা জলাশয় ছিল । শূল থেকে জলাশয়ের নাম হয় "শূলী পুকুর" । তবে এখানে কাউকে শূলে চড়ানো হয়েছিল কি না, তা জানা যায়নি । রাজার আস্তাবলের ঘোড়াগুলি ওই পুকুরে জল খেতে আসত বলে শোনা যায় ।
আরও পড়ুন : টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন বর্ধমানের একাধিক ওয়ার্ড, পরিদর্শনে বিধায়ক
এই শূলী পুকুরের ইতিহাস আতঙ্কের, প্রাণনাশের ৷ আর দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে মজে ছিল এই পুকুর ৷ তাই এই সিদ্ধান্ত নেয় বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদ ৷ এদিন শূলী পুকুরের নাম পরিবর্তন প্রসঙ্গে ডঃ রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় জানান যে, এটা একটা "স্থূল শব্দ" ৷ মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত ৷ এটা শাস্তি বিধানের জায়গা ছিল এক সময় ৷ এখন সেই পরিবেশ নেই ৷ তিনি বলেন, "রাজারাও নেই, রাজাদের সেই কাজও নেই ৷ এখন নতুন যুগে আমরা সবাই জীবন চাই, জীবনে আনন্দ চাই ৷ তাই শূলী পুকুর মৃত্যুর দ্যোতনা মাত্র ৷ তার পরিবর্তে আমরা জীবনের দ্যোতনা আনতে চাইছি, তাই নাম হয়েছে জীবন-সায়র ৷"
মহারাজার আমলে শাস্তি দেওয়ার জায়গা শূলী পুকুরে নতুন প্রাণ সঞ্চার করল বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদ এই পুুকুর সংস্কারে ইতিমধ্যে 24 লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে ৷ এর পর আলো, আরও কিছু কাজ হবে বলে জানিয়েছেন ডঃ রবিরঞ্জন ৷ তাঁর মতে, এটা দুঃখের মাঝে সুখ ৷ এছাড়া গোলাপবাগ সংস্কার, ক্লকটাওয়ারের কাছে ঝরনা তৈরির কথা আছে ৷ বাঁকা নদী সংস্কার করা হবে, 5-6 তলা বাড়ি করে এক-একটা তলায় অনেক কিছু করার পরিকল্পনা রয়েছে । আর রাজবাড়ির চারপাশে মুরগির দোকান, ডিমের দোকান মানাচ্ছে না, তাই ছিমছাম পরিষ্কার শহর তৈরির উদ্যোগ চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি ৷