বর্ধমান, 26 জুন:রবিনসন স্ট্রিটের কঙ্কাল কাণ্ডের ছায়া বেলঘড়িয়াতে । যেখানে ভাইয়ের মৃতদেহ আগলে ছিলেন তাঁর দাদা । ওই দাদা (বীরেন্দ্রকুমার দে)-রও পচাগলা দেহ ও আর একটা কঙ্কাল উদ্ধার করে পুলিশ । ররিনসন স্ট্রিটের কঙ্কাল কাণ্ডের অন্যতম চরিত্র পার্থ দে-র চিকিৎসা করেছিলেন বিশিষ্ট মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ওমপ্রকাশ সিং । তাঁর মতে, মূলত একাকিত্ব, নিজেদের মধ্যে গভীর ভালোবাসার সম্পর্ক কিংবা মানসিক কারণে এই ধরনের ঘটনা বারবার ঘটছে ।
মনোবিদেরা বলছেন, শিক্ষিত সমাজের মধ্যে একা থাকার একটা প্রবণতা দেখা যায় । অনেকেই এমন আছেন, যাঁরা উচ্চ পদে কর্মরত । তাঁদের মধ্যে অনেকেই নিজেদের সমাজে কিংবা পাড়া প্রতিবেশীদের সঙ্গে সেই ভাবে মেলামেশা করেন না । সে ক্ষেত্রে দেখা যায়, তাঁদের পরিবারে যদি দুজন বা তিনজন থাকেন, এবং তাঁদের কেউ মারা যান, তাহলে আত্মিক সম্পর্কের কারণে তাঁরা সেটা মেনে নিতে চান না । তাঁদের ধারণা হয়, হয়তো বা মৃত ব্যক্তি গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, তাই তাঁর ঘুমের যাতে ব্যাঘাত না হয়, সেজন্য মৃতদেহর পাশে বসে পাহারা দিতে শুরু করেন তিনি । এর ফলে সেই ব্যক্তির নিজের ক্ষতি হয়ে যায় । কিন্তু বস্তি অঞ্চল কিংবা যেখানে মানুষজন দলবদ্ধভাবে বসবাস করেন, সেইসব জায়গায় এই ধরনের ঘটনা সাধারণত দেখা যায় না ।
ইটিভি ভারতের মুখোমুখি হয়ে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ওমপ্রকাশ সিং বলেন, মিশর কিংবা ইন্দোনেশিয়াতে একটা জনজাতি আছে, যাঁরা তাঁদের পরিবারের কেউ মারা গেলে সেই মৃতদেহকে সংরক্ষণ করে রেখে দেন । এমনকী মৃতদেহকে তাঁরা খেতেও দেন । এটা তাঁদের সমাজের একটা রীতি বলা চলে । তবে আমাদের সমাজে যেটা দেখা গিয়েছে, যদি দুজনের মধ্যে আত্মিক সম্পর্ক থাকে, সে ক্ষেত্রে তাঁদের মধ্যে কোনও একজন মারা গেলে, সেটা আমরা মেনে নিতে পারি না । তাই কেউ মারা গেলে অনেক পরিবারকে বলতে শোনা যায় যে না, সে মারা যায়নি ।
আরও পড়ুন:রবিনসন স্ট্রিটের চেয়েও মর্মান্তিক ! উদ্ধার ভাইয়ের কঙ্কাল ও দাদার পচাগলা দেহ