পূর্বস্থলী, 2 অক্টোবর:প্রায় তিন মাস ধরে জল দাঁড়িয়ে রয়েছে গ্রামের রাস্তায় । যাতায়ত করতে সমস্যায় পড়ছেন গ্রামবাসীরা ৷ চাষের কাজেও দেখা দিয়েছে সমস্যা। অন্যদিকে, ক্রমশ ভয়ের চেহারা নিচ্ছে ডেঙ্গি। এভাবেই দিন কাটছে পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী এক নম্বর ব্লকের সমুদ্রগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের বাঘাডাঙা এলাকায় বাসিন্দাদের। পূর্ব বর্ধমান জেলার ডেঙ্গি আক্রান্ত অঞ্চলগুলির মধ্যে পূর্বস্থলীর দু'টি ব্লকই রয়েছে বলে জানা গিয়েছে প্রশাসন সূত্রে ।
গ্রামের নিকাশির হালও তথৈবচ ৷ তার জেরে বর্ষার শুরু থেকেই জল জমতে শুরু করেছে ৷ পরিস্থিতি এমনই যে গ্রামবাসীরা বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না । কাজের প্রয়োজনে বাইরে বের হলে হাঁটু সমান জল পেরোতে হচ্ছে প্রতিদিন । গ্রামের বেশিরভাগ মানুষই চাষের উপরে নির্ভরশীল। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে ধান কাটার পরে তা শুকানো কার্যত অসম্ভব হয়ে উঠেছে। গবাদি পশুদের নিয়েও সমস্যা তৈরি হয়েছে ৷ কোনও কোনও বাড়ির রান্নাঘরেও ঢুকেছে জল। গ্রামবাসীদের দাবি, বারাবরা বলার পরেও জল নামানোর কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পঞ্চায়েত।
সুভাষচন্দ্র মন্ডল নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, "আষাঢ় মাস থেকে বৃষ্টির জল জমছে । এখনও সমস্যার সমাধান হয়নি । গ্রামে জল ঢুকেছে ৷ বৃষ্টির জেরে তিন মাস কাজ প্রায় বন্ধ । গ্রামের 25-30 টি পরিবার একই সমস্যায় পড়েছে। ফলে আর্থিক ভাবে ক্ষতির মুখে পড়ছি আমরা। বৃষ্টি হলে সমস্যা আরও বেড়ে যায়। প্রতিদিন এই নোংরা জল পেরিয়ে যাতায়াত করতে হয়। পঞ্চায়েত কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না ।" আরেক বাসিন্দা সত্যরঞ্জন মাঝি বলেন, "প্রায় তিন মাস ধরে জল জমে আছে । আমরা চাষের উপরে নির্ভরশীল। জল জমে থাকায় ধান শুকাতে পারছি না। প্রবল অসুবিধার মুখে পড়েছি ৷"
আরও পড়ুন:জন্মদিবসে ডেঙ্গির ডেরায় স্প্রে করলেন গান্ধিজী! অভিনব প্রতিবাদ প্রদেশ কংগ্রেসের
অন্য়দিকে, গ্রাম প্রধান রঞ্জিত দেবনাথে দাবি, এই সমস্য়ার দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করছেন তাঁরা ৷ তিনি বলেন, "বাঘাডাঙা এলাকায় এই সমস্যা রয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে যাতে জল নিকাশি ব্যবস্থা ভালো করা যায় তা নিয়ে আমরা উদ্যোগ নিয়েছিলাম। পিডব্লুডি-র জায়গায় একটা খাল ছিল। ওই খাল বুজিয়ে বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে । ফলে জল নিকাশির জন্য কোনও ব্যবস্থা নেই । বিডিও-র কথা মতো আমরা গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলি। গ্রামবাসীরা জায়গা দিতে রাজি হয়নি। ফলে পিডব্লুডি-র জায়গা খুঁড়ে জল নিকাশি ব্যবস্থা করা হয় । একটি পুকুর মালিকের সঙ্গে কথা বলে সেখানে জল ফেলার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু পুকুরের জল উপচে পড়ায় মালিক ফের আটকে দেয় । নিকাশি সমস্যা রয়েই গিয়েছে। আমরা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি । পাশাপাশি ডেঙ্গি নিয়েও আমরা সচেতন ৷"