বর্ধমান, 25 জুন : দিন আনা দিন খাওয়ার সংসার । শিক্ষার চেয়ে এক মুঠো খাবারের চিন্তা তাদের কাছে অনেক বেশি । বাচ্চাদের মুখে ভাত জোগাতে সকাল হলেই মাঠে-ঘাটে কাজে বেরিয়ে পড়েন বাবা-মায়েরা । কেউ কেউ পরিচারিকার কাজেও চলে যান । ফলে সারাদিন আধপেটা খেয়ে দিন চলে বাচ্চাদের । স্কুল থাকলে সেখানে তাদের রেখে নিশ্চিন্ত হতেন বাবা-মায়েরা । খাবারও জুটত একবেলা । কিন্তু কোরোনার জেরে সেসব এখন অতীত । মার্চ মাস থেকে স্কুলের পঠন-পাঠন বন্ধ হওয়ায় এখন পড়াশোনাও শিকেয় উঠেছে । কারণ, তাদের নেই স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটার। ফলে হচ্ছে না অনলাইন ক্লাস । এমনই চিত্র দেখা গেছে পূর্ব বর্ধমানের কালনা, কাটোয়াসহ জেলার বিভিন্ন অংশে।
রাজ্যে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে মার্চের মাঝামাঝি থেকে । লকডাউন শুরু হতেই স্কুল-কলেজের পঠনপাঠন বন্ধ হয়ে যায় । কবে স্কুল-কলেজ খুলবে তা আপাতত অনিশ্চিত । গতকালই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, রাজ্যে লকডাউনের সময়সীমা বাড়ছে । ফলে 31 জুলাই পর্যন্ত বন্ধ থাকছে স্কুল, কলেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান । এই পরিস্থিতি কীভাবে এবছরের সিলেবাস শেষ হবে ? কীভাবেই বা পড়াশোনা করবে ছাত্র-ছাত্রীরা ? এইসব মাথায় রেখে রাজ্যের বেসরকারি স্কুলগুলির পাশাপাশি সরকারি স্কুলও অনলাইনে পঠনপাঠন শুরু করে । সোশাল মিডিয়া অ্যাপ বা হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে চলছে নোটস বিনিময় । ভিডিয়ো কলিংয়ে চলছে ভার্চুয়াল ক্লাস । কিন্তু এর জন্য প্রাথমিকভাবে দরকার ইন্টারনেট ও স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটার । কিন্তু যাদের দিন আন্তে পান্তা ফুরোয়, দু'বেলা দু'মুঠো খাবার ঠিকমতো জোটে না তাদের কাছে কোথা থেকে আসবে স্মার্ট ফোন ? কোথা থেকেই বা জুটবে ইন্টারনেটের খরচা ? ফলে মোবাইলের অভাবে পিছিয়ে পড়ছে এইসব ছাত্র-ছাত্রীরা । যার কথা কার্যত মেনে নিচ্ছেন স্কুলশিক্ষক থেকে জেলা প্রশাসনের সকলেই ।