কর্ণাটকের জনাদেশকে স্বাগত জানালেন অভিষেক কালনা, 13 মে: বাংলার পথ অনুসরণ করেই কর্ণাটকের মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে । কর্ণাটকে বিজেপির পরাজয়ের পর এটাই প্রতিক্রিয়া তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের । তিনি বলেন, "আপনি যাকে ইচ্ছে ভোট দেবেন । নিজের গণতান্ত্রিক ভোটাধিকার প্রয়োগ করে যাকে ইচ্ছে ভোট দিন । শুধু বিজেপিকে হারান । এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বলেছিলেন । সেটাই কার্যত হয়েছে কর্ণাটকে ।"
ধর্মের সুড়সুড়ি দিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদের রাজনীতি, ধর্মের ভিত্তিতে প্রচার - এগুলি কোনওদিন রাজনৈতিক ইস্যু হতে পারে না বলে মত অভিষেকের । তিনি আরও বলেন, বিজেপি বারবার ধর্মের নামে মানুষকে ভুল বুঝিয়েছে । ধর্মের রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করা শুরু হয়েছিল বাংলার মাটিতে । অভিষেকের মতে, বিজেপি মানুষের পালস বোঝে না । মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করা শুরু করে দিয়েছে । তাঁর কথায়, "আমরা খুশি ৷ বাংলা 2021 সালে যে পথ দেখিয়েছিল কর্ণাটকের মানুষ সেটা অনুসরণ করেছে ।"
অভিষেকের দাবি, বাংলা আজ যা করে দেখায়, সেটাই অনুসরণ করে দেশ ৷ একই রকম ভাবে বাংলার মানুষ যেটা 2021-এ করেছিল, কর্ণাটক সেটা 2023-এ করেছে ৷ আর ভারতের মানুষ সেটাই 2024-এ করে দেখাবে বলে দাবি করেন তৃণমূল সাংসদ ৷ তাঁর কথায়, "এদের পতনের শুরু হয়ে গিয়েছে ৷ এদের যাওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা ৷"
বিজেপি বাংলা-সহ বিভিন্ন জায়গায় যখন প্রচারে গিয়েছে, তখনই তুলে ধরেছে ডবল ইঞ্জিন সরকারের কথা ৷ এই কথা টেনেই অভিষেক কটাক্ষের সুরে বলেন, যারা ডবল ইঞ্জিন বলে গলা ফাটায়, তারাই তো কর্ণাটকে ক্ষমতায় ছিল ৷ তারাই তো মণিপুরে সরকারে আছে ৷ তাহলে মণিপুরে আগুন জ্বলছে কেন ? পাঁচ বছর দেখার পর তাহলে কর্ণাটকের মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করল কেন ?
অভিষেকের তোপ, "এটা আসলে ডবল ইঞ্জিন নয়, ট্রাবল ইঞ্জিন ৷ এটা আর মানুষ চায় না ৷ মানুষ চায়, শিক্ষা, বাসস্থান, জল, নিজেদের অধিকার সুরক্ষিত করতে ৷" কিন্তু বিজেপি পরিষেবার কথা না বলে শুধুই ধর্মের রাজনীতি ও লাভ-জিহাদের প্রচার করে বলে অভিযোগ করেছেন ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ ৷
এ দিন ফের বিজেপি বিরোধী জোট গঠনের ডাক দিয়েছেন তিনি ৷ অভিষেক বলেন, "আমরা চাই সবাই সর্বশক্তি প্রয়োগ করে একসঙ্গে লড়ুক ৷ যেন বিজেপি বিরোধী ভোট ভাগ না হয় ৷ যে যেখানে ক্ষমতায় রয়েছে তারা সেখানে লড়ুক ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাই বলেছিলেন ৷ বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর মতবিরোধ থাকতে পারে, কিন্তু কর্ণাটকের মানুষের কাছে তিনি আবেদন জানিয়েছিলেন যে, আগামী দিনে যাকে ইচ্ছে ভোট দিন, চাইলে কংগ্রেসকে ভোট দিন, কিন্তু বিজেপিকে ভোট দেবেন না ৷"
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বারবার মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে বিজেপির হাত শক্ত করছেন বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তাঁর আক্ষেপ, গত বিধানসভা নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোট হওয়াতেই বিজেপি বিরোধী জোট ভাগ হয়েছে ৷ এই দলগুলি তৃণমূলের সঙ্গে জোট করলে বিজেপি আরও কিছু কম আসনে জিততো বলে মনে করেন তিনি ৷
বিজেপি ভোটে জিতলেই মোদি আর শাহকে কৃতিত্ব দেওয়া হয় আর পরাজিত হলেই সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার দিকে আঙুল তোলা হয় বলে কটাক্ষ করেন অভিষেক ৷ তাঁর দাবি, বিজেপি আসলে রিমোট কন্ট্রোলে চলে ৷ কর্ণাটকে কংগ্রেসের জয় কি রাহুল গান্ধির ভারত জোড়ো যাত্রার পথ ধরেই এসেছে ? এই প্রশ্নের জবাবে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দাবি, এই কৃতিত্ব মানুষের ৷ তারা বিজেপির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে বলেই আজ কর্ণাটকে এই ফলাফল ৷
আরও পড়ুন:বিজেপির জন্য কর্ণাটকের ফল আগামীর শিক্ষা: মমতা