বর্ধমান, 3 নভেম্বর: তখন বর্ধমানের (Burdwan) মহারাজা তেজচাঁদের আমল । বর্ধমানের বেশিরভাগ এলাকা ছিল ঘন জঙ্গলে ভর্তি । বিশেষ করে দামোদর তীরবর্তী তেজগঞ্জ এলাকায় ছিল আরও গভীর জঙ্গল । সেখানেই কালী মন্দিরে পুজো করতেন রাজা । ওই কালী মন্দিরে কেউ সচরাচর যেতেন না । কথিত আছে, যারা অন্যায় অত্যাচার করত, তাদের এই মন্দিরে দেবীর সামনে হাঁড়িকাঠে নরবলি দেওয়া হত । তাই সেই সময় এই কালী দক্ষিণ মশান কালী নামে পরিচিত ছিল । ফলে দিনের বেলাতেও ওই এলাকা দিয়ে যাতায়াত করার কেউ খুব একটা সাহস করত না ।
রাজার এক কন্যা ছিল, নাম বিদ্যা ৷ আর রাজবাড়ির পুজারি ছিলেন সুন্দর নামে এক যুবক । সুন্দরের আর্থিক অবস্থা মোটেই ভাল ছিল না । রাজবাড়িতে ফুল দিতে আসত মালিনী মাসি । সে প্রতি ঠাকুর বাড়িতে ফুলের মালা দিত । যথারীতি একদিন মালিনী মাসি মন্দিরে ফুলের মালা নিয়ে এসেছেন । সেই মালা দেখে পুজারি সুন্দর খুব আকৃষ্ট হন । তিনি মালিনী মাসিকে জিজ্ঞাসা করেন, এত সুন্দর ফুলের মালা কে গেঁথেছে ? যে মালা গেঁথেছে তাকে দেখার জন্য ছটফট করতে থাকে সুন্দর । মালিনী মাসি তাকে বলে, রাজকুমারী বিদ্যা মালা গেঁথেছে । কিন্তু তাকে দেখা সম্ভব নয় ।
পরবর্তীকালে বিদ্যার সঙ্গে সুন্দরের পরিচয় হয় । তাদের মধ্যে প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে । এমনকী তারা নাকি মন্দিরের পাশ থেকে রাজবাড়ি পর্যন্ত একটা সুড়ঙ্গ খুঁড়ে ফেলে । সুড়ঙ্গের ভিতর দিয়ে বিদ্যা ও সুন্দর একে-অপরের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করতে যেত । একদিন চরের মাধ্যমে তেজচাঁদ বিদ্যা ও সুন্দরের প্রণয়ের ব্যাপারে জেনে ফেলেন । খবরটা কানে যেতেই রাজা প্রচণ্ড রেগে যান । তিনি বিদ্যা এবং সুন্দরকে কালীর সামনে বলি দেওয়ার আদেশ দেন ৷ রাজার হুকুম মতো তাদেরকে বলি দিতে নিয়ে যাওয়া হয় ।
আরও পড়ুন:Dakatia Kali Puja: অমাবস্যার রাতে বর্ধমানের রাজাকে চাঁদ দেখিয়েছিলেন সাধক