মেমারি, 2 মার্চ:মেয়ে এমএ পাশ করেছে । ছেলে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী (Madhyamik Examinee) । অথচ মা আয়েশা বেগম মাধ্যমিকের গণ্ডি পার করেননি। তা নিয়ে কিছুটা আক্ষেপ ছিল আয়েশার মনে। এদিকে মেয়ে ফিরদৌসি মা ও তাঁর দাদাকে উৎসাহ দিত পড়াশোনার জন্য। তাই মেয়ের ইচ্ছেপূরণ করতেই ছেলে পারভেজ আলমের সঙ্গে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসলেন বছর বছর একচল্লিশের আয়েশা বেগম (Madhyamik Exam 2023) ।
পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড় থানার ঘাটশিলা গ্রামের বাসিন্দা আয়েশা। আইসিডিএস কর্মী আয়েশার স্বামী পেশায় কৃষক। তাঁর ছেলে 21 বছর বয়সি পারভেজ আলম বছর ছয়েক আগে লেখাপড়া ছেড়ে দেয় । কিন্তু মেয়ে ফিরদৌসি লেখাপড়া চালিয়ে যান । তিনি এমএ পাশ করেন । এরপর তিনি মা ও দাদাকে পড়াশোনার জন্য উৎসাহ দিতে থাকে । মূলত তাঁর উৎসাহেই তাঁরা ঘাটশিলা সিদ্দিকীয়া হাই মাদ্রাসায় ভরতি হয়ে যায়। এরপর মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসার প্রস্তুতি নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন দু'জনে। মেমারি হাই মাদ্রাসায় তাঁদের মাধ্যমিক পরীক্ষার সিট পড়েছে । ফিরদৌসির উদ্যোগে খুশি শিক্ষকেরাও ।
আয়েশা বেগম বলেন, "আমি পড়াশোনা করতে পারিনি । আমার মেয়ে লেখাপড়া শিখেছে । তাই সে আমায় পরামর্শ দেয় পড়াশোনা আরও শেখার ৷ পড়াশোনা শিখলে আমার কাজের ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা হবে বলে মেয়ে জানায় । তাই মেয়ের পরামর্শ মতো হাই মাদ্রাসায় ভরতি হই। আমার ছেলের সঙ্গে একসঙ্গে মাধ্যমিক দেওয়ার প্রস্তুতি নিই । শুরু করি পড়াশুনা । মাধ্যমিক পরীক্ষা ভালোই দিচ্ছি । সেই সঙ্গে আমার মতো যারা আছেন বিভিন্ন প্রতিকূলতার কারণে পড়াশোনা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন, তাদেরও পড়শুনা শুরু করতে পরামর্শ দিচ্ছি ।"
মেমারি হাই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক তুরত আলি জানান, এতদিন ধরে মেমারি হাই মাদ্রাসায় মাধ্যমিক পরীক্ষার সেন্টার পড়ছে । তবে এইভাবে মা ছেলে একসঙ্গে পরীক্ষা দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি । মা আয়েশাকে অভিবাদন জানিয়েছেন তিনি। আজ তাঁকে দেখে অনেক মহিলা যারা বিয়ের পর পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছেন তারা উৎসাহিত হবেন বলে প্রধান শিক্ষকের মত। তুরত আলি বলেন, "তিনি যদি আরও পড়াশুনা করতে চান তাহলে আয়েশাকে সবরকমভাবে সাহায্য করা হবে।"
আরও পড়ুন: ইচ্ছে শক্তির জেরে মাধ্যমিকে বসল ফলতার বিশেষভাবে সক্ষম ছাত্রী