বর্ধমানে বন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার মা ও দুই মেয়ের মৃতদেহ বর্ধমান, 23 ফেব্রুয়ারি: বাড়ির ভিতর থেকে উদ্ধার হল মা ও তাঁর দুই মেয়ের মৃতদেহ (Dead Bodies of Mother and Her Two Daughters)। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের নাম মৃণালিনী চৌধুরী (60), বন্দিতা চৌধুরী (40), সংঘমিতা চৌধুরী (32)। পূর্ব বর্ধমান জেলার বর্ধমান শহরের পীরপুকুর এলাকার ঘটনায় স্বভাবতই উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। বর্ধমান থানার পুলিশ ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পীরপুকুর এলাকার যে বাড়ি থেকে তাঁদের দেহ উদ্ধার হয়েছে সেখানেই মৃণালিনী চৌধুরী তাঁর দুই মেয়েকে নিয়ে থাকতেন।ওই বাড়ির দোতলায় থাকেন মৃণালিনীর মা প্রতিমা মণ্ডল। রূপালী হাজরা নামে এক মহিলা তাঁদের বাড়িতে আয়ার কাজ করতেন। অন্যান্য দিনের মতো বৃহস্পতিবার তিনি সকালবেলায় কাজে আসেন। বাড়ির দরজায় দাঁড়িয়ে ডাকাডাকি করলে কেউই সাড়া দেননি। বেশ কিছুক্ষণ কেটে যাওয়ার পর তখন তিনি তাঁর মৃণালিনীদেবীর প্রতিবেশী এবং আত্মীয়দের খবর দেন। এরপর তাঁর আত্মীয়রা আসেন, দেখেন ডাইনিংয়ে তিনজনের মৃতদেহ পড়ে রয়েছে। পাশেই পড়েছিল একটা বিষের বোতল। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান সকলে বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন।
বাড়ির আয়া রূপালী হাজরা বলেন, "আমি এই বাড়িতে আয়ার কাজ করি। দিদাকে দেখাশোনা করি। এদিন সকালে এসে কলিং বেল বাজিয়েছি। কেউ দরজা খোলেননি। উপরে দিদা ছিল। তিনি ডাকতে থাকেন। তখন পাশের বাড়িতে জানাই। তাঁরা বাইরের ব্যালকনি দিয়ে দোতলায় ওঠেন। তাঁরা নীচে নেমে দেখেন তিনজন ডাইনিংয়ে পড়ে আছে। পাশে একটা বিষের বোতল পড়ে রয়েছে। মৃণালিনীর মামা বিশ্বনাথ মল্লিক বলেন, "করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃণালিনীর স্বামী ও বাবা মারা যান। ফলে বাড়িতে আর কোনও পুরুষ ছিলেন না। ফলে মৃণালিনী মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন ৷"
আরও পড়ুন:বাগুইআটি কাণ্ডে দেহ উদ্ধারের 14 দিন পর ঘটনাস্থলে ফরেনসিক দল
তবে তার জেরে যে এমন কাণ্ড ঘটবে তা স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি তাঁরা। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সিংহ রায় জানান, মা ও দুই মেয়ের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য দেহগুলি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না-আসা পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট করা যায়নি। চৌধুরী বাড়িতে এমন মর্মান্তিক ঘটনায় হতবাক সকলে।