পূর্ব বর্ধমান, 12 ডিসেম্বর : বিএসসি পাশ করে কোনও চাকরি পাননি বর্ধমান শহরের বাসিন্দা সুনীতা চৌধুরী ৷ বেশ কয়েকবার চাকরির পরীক্ষা দিয়েছিলেন তিনি ৷ কিন্তু, চাকরি পাননি ৷ অগত্যা সংসারের হাল ধরতে এবং মেয়েকে মানুষ করতে দইবড়া বিক্রি করছেন সুনীতা চৌধুরী (BSc Pass Woman Sells Dahi Vada) ৷ প্রসঙ্গত, মা-বাবার পছন্দে ঝাড়খণ্ডের এক যুবকের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছিল ৷ কিন্তু, স্বামীর অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে মেয়েকে নিয়ে মা-বাবার কাছে চলে আসেন তিনি ৷ তারপর বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর একাকী সুনিতা চৌধুরী শুরু করেছেন তাঁর জীবন সংগ্রাম (BSc pass woman Sells Dahi Vada for Her Daughters Upbringing) ৷
ছোট থেকেই সুনীতার স্বপ্ন ছিল পড়াশোনা শিখে সরকারি চাকরি করার ৷ বর্ধমান শহরের বাজেপ্রতাপপুর এলাকার বাসিন্দা সুনীতা চৌধুরী, বর্ধমানের উইমেন্স কলেজ থেকে বিএসসি পাশ করার পরে একের পর এক সরকারি চাকরির পরীক্ষা দিতে থাকেন তিনি ৷ কিন্তু, ভাগ্য তাঁর সহায় ছিল না ৷ এরই মাঝে সুনীতার বাবা-মা ঝাড়খণ্ডের এক যুবকের সঙ্গে তাঁর বিয়ে ঠিক করেন ৷ তাঁদের এক কন্যাসন্তান রয়েছে ৷ কিন্তু মেয়ের জন্মের কিছুদিন পর থেকেই শুরু হয় সাংসারিক অশান্তি ৷ অভিযোগ, সুনীতার স্বামী মাঝেমধ্যেই রাতে বাড়ি ফিরতেন না অথবা মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরে অশান্তি করতেন ৷ এই অবস্থায় স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ছাড়েন সুনীতা ৷ চলে আসেন বর্ধমানে বাপের বাড়িতে ৷
কিন্তু, পরবর্তী সময়ে বাবা এবং মা দু’জনেই মারা যাওয়ার পর অথই জলে পড়েন সুনীতা চৌধুরী ৷ আর্থিক সমস্যায় জেরবার হয়ে অবশেষে সিদ্ধান্ত নেন দইবড়ার দোকান দেওয়ার ৷ মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করার পর তার খরচ চালানো এবং অন্যান্য দায়িত্ব পালনের চাপে এই সিদ্ধান্ত নেন বিএসসি পাশ সুনীতা ৷ প্রথমে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, সাইকেলে করে খাবার বিক্রি করবেন ৷ কিন্তু, সেটা চপ বা সিঙ্গারা নয় ৷ এমন খাবার যা মানুষের মন ভরবে ৷ আর শরীর খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না ৷ সেই ভাবনা থেকেই দইবড়া বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন তিনি ৷