মেদিনীপুর, 22 মে : কোরোনা মোকাবিলায়, বজায় রাখতে হবে সামাজিক দূরত্ব৷ করা যাবে না কোনও সামাজিক অনুষ্ঠান৷ যার জেরে বিপাকে পড়েছেন ফোটোগ্রাফাররা৷ সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ থাকায়, কাজ পাচ্ছেন না তাঁরা ৷ কবে পরিস্থিতি ঠিক হবে, সে বিষয়ে সন্দীহান পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ফোটোগ্রাফাররা ৷
দেশে কোরোনার প্রকোপ শুরু হয় ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে ৷ লকডাউন শুরু হয় মার্চের 21 তারিখ থেকে ৷ এই সময় বিয়েসহ বিভিন্ন শুভ অনুষ্ঠান হয়ে থাকে৷ এই সময় ব্যস্ততার মধ্যেই কেটে যায় ফোটোগ্রাফারদের৷ ফোটোশুট থেকে শুরু করে এডিটিং, নিশ্বাস ফেলার সময় থাকে না তাঁদের ৷ তবে, এবারের চিত্রটা একেবারেই অন্যরকম ৷ বন্ধ ক্যামেরা ৷ চলছে না এডিটিংয়ের কোনও কাজ৷ সংসার চলবে কীভাবে? এই চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুরের ফোটোগ্রাফাররা৷
চিন্তায় পশ্চিম মেদিনীপুরের ফোটোগ্রাফাররা লকডাউনে যা ক্ষতি হওয়ার তা হয়েই গেছে৷ তবে, লকডাউন পরবর্তী পরিস্থিতিতে কী হবে? সে বিষয়েও সন্দীহান অনেকেই৷ ফোটোগ্রাফারদের মতে, লকডাউন উঠে গেলেই মানুষ আবার আগের মতো অনুষ্ঠান করবে কি, সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে৷
গ্রাহকদের পছন্দের জন্য ফোটোকে আরও সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য দরকার আধুনিক মডেলের বেশ কিছু ক্যামেরা ও ইকুয়েপমেন্ট৷ এছাড়াও বিয়ে বাড়িতে আসা নিমন্ত্রিতদের সামনে বড়ো স্ক্রিনের মাধ্যমে লাইভ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হয়৷ এই কাজের জন্যও প্রয়োজন বেশ কিছু ইকুয়েপমেন্টের৷ তাই, ক্যামেরাম্যানেদের অনেকেই ব্যাঙ্কের থেকে লোন নিয়ে কিনেছেন এই সমস্ত ক্যামেরা ও ইকুয়েপমেন্ট৷ এই পরিস্থিতিতে তাঁরা কীভাবে লোন শোধ করবেন? এমনই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে ক্যামেরাম্যানেদের মধ্যে৷
ফোটোগ্রাফার তরুণ ঘোষ বলেন, ''চাকরি না পাওয়ায় ব্যাঙ্ক থেকে মোটা টাকা লোন নিয়ে ক্যামেরা, ইকুয়েপমেন্ট কিনেছি। মাসের শুরুতে মোটা টাকার EMI গুনতে হয় ৷ কিন্তু এই লকডাউনে সমস্ত ব্যবসা বন্ধ। আমরা দিন আনি দিন খাই মানুষজন। 50 দিনের উপর লকডাউনে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি, তার উপর রয়েছে ব্যাঙ্কের লোন শোধের চাপ। আমরা যেহেতু ফোটোগ্রাফির কাজ করে থাকি লোকে আমাদের মিডিল ক্লাস ভাবে ৷ তাই আমাদের কোনো সাহায্য জোটেনি। সরকারি-বেসরকারিভাবে কোনরূপ সাহায্য, এমনকী কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সামান্য চাল-ডাল দেয়নি আমাদের বাড়িতে। বাড়িতে মা-বাবা বউ-বাচ্চা নিয়ে আগামী দিনে কীভাবে চলবে সেই চিন্তায় আতঙ্কিত আমরা৷"
ভিডিয়ো এডিটর গোপাল সেন বলেন, '' আমরা পাঁচ বছর পিছিয়ে গেলাম৷ বিলাসবহুলতা দেখাতে গেলে এ জিনিস আর হবে কি না সন্দেহ আছে৷ আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছি৷ লকডাউন উঠলে কী হবে বোঝা যাচ্ছে না৷''