মেদিনীপুর, 24 মে: মেদিনীপুরের বেড়বল্লভপুরে অস্বাভাবিক মৃত্যু হল শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের এক ছাত্রের । রাতে খাওয়ার পর বাড়ির লোক ডাকতে গিয়ে সাড়াশব্দ না পেয়ে তাঁর ঘরের দরজা ভাঙেন । এরপরেই অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ওই ছাত্রকে । মৃত যুবকের নাম দেবদীপ মেইট্টা । বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের মেদিনীপুর থানার অন্তর্গত বেড়বল্লভপুর এলাকায় । ঘটনার তদন্তে নেমেছে মেদিনীপুর থানার পুলিশ ।
দেবদীপের বাবা চঞ্চল মেইট্টা পেশায় শিক্ষক । সম্প্রতি লকডাউনের আগে বাড়ি ফিরেছিলেন দেবদীপ । শুক্রবার রাতে বাড়িতে খাওয়া-দাওয়ার পর দেবদীপের ঘরে তাঁকে ডাকতে যান চঞ্চলবাবু । ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল । অনেকক্ষণ ডাকাডাকির পরও ঘর থেকে সাড়াশব্দ না পেয়ে সন্দেহ হয় বাড়ির লোকেদের । অবশেষে দরজা ভাঙেন তাঁরা । দেখেন মেঝেতে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছেন দেবদীপ । সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয় মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে । সেখানে চিকিৎসক দেবদীপকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ।
দেবদীপকে উদ্ধার করার সময় চালু ছিল তাঁর ব্যবহার করা ল্যাপটপ । পরিবার সূত্রে খবর, শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের বি-টেকের ছাত্র ছিলেন দেবদীপ । ফোর্থ সেমেস্টারের পড়াশোনা করছিলেন । সম্প্রতি লকডাউনের আগে বাড়ি ফিরেছিলেন বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য । প্রতিদিনকার মতো গতকালও খাওয়া-দাওয়া করে নিজের রুমে চলে যান । রাত পৌনে বারোটা নাগাদ চঞ্চলবাবু ছেলেকে একবার ডাকতে যান । বারবার ডাকার পরও কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে জানালা দিয়ে উঁকি মেরে দেখেন মেঝেতে পড়ে রয়েছেন দেবদীপ । এদিকে ল্যাপটপ চলছে । এই অবস্থায় দরজা ভেঙে দেবদীপকে উদ্ধার করা হয় । তাঁকে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন । পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ।
দেবদীপের বাবা চঞ্চলবাবু বলেন, "ছেলে পড়াশোনায় খুব ভালো ছিল । দুই ছেলের মধ্যে দেবদীপ ছোটো । ফোর্থ সেমেস্টারে পড়াশোনা করছিল শিবপুরে । সারাক্ষণ পড়াশোনা নিয়েই ব্যস্ত থাকত । প্রতিদিনকার মতো গতকালও খাওয়া-দাওয়া করে নিজের রুমে চলে যায় । আমি ঘণ্টায় ঘণ্টায় একবার করে দেখতে যেতাম ছেলে কি করছে না করছে । পৌনে বারোটা নাগাদ যখন আমি দেখতে যাই কোনও সাড়াশব্দ পাইনি । এরপর জানালা দিয়ে উঁকি মেরে দেখি মেঝেতে পড়ে রয়েছে ও । পাশে ল্যাপটপ চলছে । তাড়াহুড়ো করে দরজা ভেঙে ওকে উদ্ধার করি । মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাই । চিকিৎসক ওকে মৃত বলে ঘোষণা করেন । কী কারণে মারা গেল তা বলতে পারব না ।" ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ।