কেশপুর, 4 মে : ফল ঘোষণার পর রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা ঘটেছে ৷ সেই ছবি দেখা গেল পশ্চিম মেদিনীপুরেও । তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলার অভিযোগ উঠল ৷ বিজয় উৎসবের নামে মারধরের পাশাপাশি বাড়ি ভাঙচুর করেছে তৃণমূল, অভিযোগ বিজেপির । যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল ৷
নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন প্রান্তে আক্রান্ত বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা । গতকাল রাজ্যজুড়ে অশান্তির ঘটনা ঘটে ৷ জয়ের রাত থেকেই বিজয় উৎসব শুরু করে তৃণমূল ৷ চলতে থাকে সবুজ আবির মেখে তারস্বরে মাইক বাজানো, কোথাও চলে ডিজে । সকাল থেকে মোড়ে মোড়ে চোখে পড়ে এই দৃশ্য ৷ অভিযোগ, রাত থেকে কেশপুর, গড়বেতা, চন্দ্রকোনা, কেশিয়াড়ি, গুড়গুড়ি পাল, খড়গপুরের বিভিন্ন এলাকায় ভাঙচুর চালাতে থাকে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা । আক্রান্ত হয় বিজেপির কর্মীরা । দফায় দফায় ভাঙচুর চালানো হয়েছে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের বাড়িতে । এছাড়াও মেদিনীপুর সদর ব্লকের পাঁচখুরি এলাকায় বিজেপি কর্মীর বাইক পোড়ানোর অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে ।
আরও পড়ুন: দিনহাটায় রাজনৈতিক সংঘর্ষে মৃত বিজেপি কর্মী
অভিযোগ, সোমবার সকাল থেকে মেদিনীপুর সদর ব্লকের পাঁচ কোরিয়া অঞ্চলে জুয়ারহাঁটি এলাকায় তাণ্ডব চালায় শাসকদলের কর্মীরা । বিজয় উৎসবের নাম করে বাড়ি ভাঙচুর করা হয় বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মী সমর্থকের । তাণ্ডবের মাঝেই বিজেপি কর্মীদের একটি বাইকও পুড়িয়ে দেওয়া হয় । অন্যদিকে ভাঙচুর করা হয়েছে কেশপুরের কলাগ্রামে বিজেপি নেতা তন্ময় ঘোষের বাড়িও । এ ছাড়াও কেশপুরে 18 থেকে 20টি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে । এক্ষেত্রেও অভিযোগের তির শাসকদলের বিরুদ্ধে । হিংসার অভিযোগ এসেছে কেশপুর বিধানসভার আনন্দপুর এলাকা থেকেও ।
বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, তৃণমূলের সন্ত্রাসের জেরে একাধিক এলাকায় ঘরছাড়া বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা । কেশপুরের বিজেপি ঘাটাল সাংগঠনিক নেতা তন্ময় ঘোষ বলেন, "আমাদের এখানে অনেকগুলো বাড়ি ভাঙচুর করেছে তৃণমূল ৷ পাশাপাশি আমার বাড়ির বয়স্ক লোকটিকেও মারধর করা হয়েছে ৷ আক্রান্ত হয়েছে আমার ছেলে ।"
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল । এ বিষয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, "এই ধরনের কোনও ঘটনার সঙ্গে তৃণমূল যুক্ত নয়, সমস্তটাই বিজেপি করিয়েছে ৷"
2019 সালে লোকসভা নির্বাচনে জঙ্গলমহলে ভাল ফল করে বিজেপি ৷ মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম আসন দখল করে গেরুয়া শিবির । রাজনৈতিক মহলের একাংশের বক্তব্য, সেই সময় থেকে তৃণমূলের ক্ষোভ ছিল । তাই 2021-র নির্বাচনে তৃণমূল 200 উপর আসন পাওয়াতেই সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে এবং তৃণমূলের কর্মীরা লাগামছাড়া অবস্থায় উৎসবের নাম এই একতরফা ভাঙচুর চালায় ।