মেদিনীপুর, 24 অগস্ট : জঙ্গলমহলের (Janglemahal) সৌন্দর্যের আরেক নাম তপোবন (Tapoban), যা পর্যটকদের আজও আকর্ষিত করে । তবে পুরাকালের কাহিনি এখনও লোকমুখে প্রচারিত আর তা শুনতে এবং দেখতে ভিড় জমান হাজার হাজার পর্যটক । এখনও রয়েছে সীতাকুণ্ড, আর্টেজীয় কূপ ও বাল্মীকির সমাধিক্ষেত্র ।
যে বনে মুনিঋষিরা তপস্যার জন্য বাস করতেন তাকেই বলা হত তপোবন । জঙ্গলমহলের তপোবন আজও নজর কাড়ছে পর্যটকদের । পৌরাণিক কাহিনি ও গাথা শুনতে আজও এখানে ভিড় জমান পর্যটকরা । তবে এই তপোবনে সরকারি উদ্যোগে আরও ভাল কিছু কাজ হোক, সেটাই চাইছেন স্থানীয়রা ।
মেদিনীপুর থেকে ভসরা ঘাট ব্রিজ হয়ে ঝাড়গ্রামের শেষ প্রান্তে দেখা মেলে এই তপোবনের । অপরদিকে জঙ্গলমহল ঝাড়গ্রামের রামেশ্বর মন্দির থেকে 7 কিমি দূরে অবস্থিত গভীর জঙ্গল ঋষি বাল্মীকির তপোবন । কাছাকাছি রয়েছে সুবর্ণরেখা নদী, যা পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের মধ্যে যোগসূত্র হিসেবে কাজ করছে । ঘন কালো পিচ আর শাল গাছের সবুজের মেলবন্ধনে তাজা অক্সিজেনই এখানে বেশি টানে পর্যটকদের ৷
আরও পড়ুন:Bikas Bhawan: বিকাশ ভবনের সামনে বিক্ষোভে বিষ খেলেন শিক্ষিকারা, হাসপাতালে পাঁচ
এই তপোবনে এখনও রয়েছে দীর্ঘ দিনের জ্বলতে থাকা সীতাকুণ্ড, একটি আশ্রম, সীতানালা, আর্টেজীয় কূপ, ঋষি বাল্মীকির সমাধিক্ষেত্র এবং শালজঙ্গলের বিরাট প্রাকৃতিক সৌন্দর্য । এখানে পূজার্চনা উৎসব অনুষ্ঠান প্রতিদিন সকালে নিয়ম করে পালিত হয় । এই সীতাকুণ্ডে আগুন জ্বলতে থাকে সারা বছর ৷ শোনা যায়, কয়েকশো বছর ধরে এ ভাবেই নাকি আগুন জ্বলছে এই সীতাকুণ্ডে । এক মুহূর্তের জন্যও তা নেভেনি । কোভিড পরিস্থিতিতেও এখানে ভিড় জমাচ্ছেন পর্যটকেরা । তবে স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে নভেম্বর, ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে তপোবনে ভিড় উপচে পড়ে ৷
এই তপোবন নিয়ে পুরাকালের একটি কাহিনি লোকমুখে প্রচলিত আছে । এখানকার যিনি আশ্রমের দেখভাল করেন তাঁর মতে, এই তপোবন রত্নাকর দস্যুর তপোবন । তিনি বলেন, কোনও এক সময় সাধারণ মানুষের উপর লুটপাট চালানো দস্যু রত্নাকর একদিন শান্ত হয়ে যান এবং তিনি পরবর্তীকালে রামায়ণ রচনা করেন । দস্যু রত্নাকর থেকে হঠাৎ তিনি নাম পরিবর্তন করে ঋষি বাল্মীকি হয়ে ওঠেন ৷ তিনি তপোবনে তপস্যা করতেন ৷ তাঁর রচনা রামায়ণ থেকেই লব, কুশ, রাম, সীতার কাহিনি জানা যায় । রামায়ণের বেশিরভাগ অংশই এই তপোবনকে ঘিরে গড়ে ওঠে । তাঁর রচনা অনুযায়ী রামচন্দ্রের স্ত্রী সীতার বনবাসকালে এখানে দুই বীর পুত্রের জন্ম হয় । যাঁদের নাম লব ও কুশ ৷ পরবর্তীকালে এখানে রামের অশ্বমেধ যজ্ঞের ঘোড়াকে লব কুশ আটকান । এছাড়াও সীতার অগ্নিপরীক্ষা-সহ বিভিন্ন কাহিনি আজও লোকমুখে প্রচারিত রয়েছে ।
আরও পড়ুন:Dilip Ghosh : পরস্পর বিরোধী মন্তব্য করছেন মুখ্যমন্ত্রী, স্কুল-কলেজ খোলার প্রসঙ্গে তোপ দিলীপের