পশ্চিম মেদিনীপুর, 3 জুলাই: নিজে একজন অঙ্গনওয়াড়ী কর্মী কিন্তু সেই টাকায় চলছে না সংসার, হচ্ছে না বাড়ি । তাই সংসারে আর্থিক স্বচ্ছলতা আনতে এবার অঙ্গনওয়াড়িতে রান্নার কাজের পাশাপাশি টোটো নিয়েও বেরিয়ে পড়েছেন বল্লভপুরের বেবি কারক শেঠ। বছর 40-এর বেবি এখন মেদিনীপুর শহরের আনাচে-কানাচে গাড়ি চালিয়ে যাত্রী বইছেন । তাঁর স্বপ্ন একটাই নিজের এক ডেসিমেল জায়গা কিনে পরিবার নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারেন ।
মেদিনীপুর শহরের 16 নং ওয়ার্ডের বল্লভপুরে এক চিলতে বাড়িতে কোনও রকমে অসুস্থ স্বামী ও ছেলেকে নিয়ে দিন কাটান বেবি কারক শেঠ। তিনি শিবাজী সংঘ অঙ্গনওয়াড়ি স্কুলে রান্নার কাজও করেন। সেখানে প্রায় 40 জনের রান্না করতে হয় তাঁকে। ভোরবেলা উঠে ঘরের কাজ সেরে অঙ্গনওয়াড়ি স্কুলে রান্না করেন ৷ এরপরেই বেরিয়ে যান টোটো নিয়ে শহরের যাত্রী বইতে।
অক্লান্ত পরিশ্রম করে দুপুর নাগাদ ঢোকেন বাড়িতে। ছেলে-স্বামীর জন্য রান্নাবান্না করেন। এরপর একটু বিশ্রাম নিয়ে বিকেল হতেই আবার বেরিয়ে পড়েন টোটো নিয়ে বাড়তি রোগজারের আশায় ৷ স্বপ্ন একটাই, দশ বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে নিজস্ব এক জায়গা কেনা, যেখানে তৈরি করতে পারবেন নিজের বাড়ি ৷ কিন্তু কেন এই টোটো চালাতে আসলেন ? জবাবে বেবি বলেন, "স্বামী কমল কারক একজনের রিকশাচালক। দীর্ঘদিন রিকশা টেনে সংসারের ভার টেনেছেন কিন্তু টোটো বেড়ে যাওয়ায় রিকশায় আর কেউ চাপে না। এরপর রিকশা তিনি ছেড়ে ট্রলি চালিয়েছেন পরিবারের সদস্যদের মুখে অন্ন তুলে দেওয়ার জন্য ৷ কিনন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে আর ট্রলি চালাতে পারছিলেন না। ফলে স্বামী ঘরবন্দি হয়ে পড়েন ।"