পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

মেদিনীপুরে চাহিদা বাড়ছে ড্রাগন ফলের

বর্তমানে ড্রাগন ফলে মজেছে গোটা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মানুষ । পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা, ঘাটাল, খড়গপুর, কেশিয়াড়ি ফলের বাজার এখন এই ফলের রমরমা ৷ ড্রাগন ফলের দাম 500-600 টাকা প্রতি কেজি । কখনও কখনও সিজন হিসাবে দাম কমে বা বাড়ে । এই ফলের নির্দিষ্ট ক্রেতাও রয়েছেন ।

image
চাহিদা বাড়ছে ড্রাগন ফলের

By

Published : Jun 28, 2020, 12:30 AM IST

মেদিনীপুর, 27জুন : বিশ্ব বাজারে বন্দিত ৷ ভারতেওএখন ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হচ্ছে ড্রাগন ফল ৷ মূলত অ্যামেরিকা ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়এর বিপুল চাহিদা ৷ বর্তমানে বিশ্বের প্রায় সব প্রান্তেই এই ফলের চাষ করা হয় ৷ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমান অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ফাইবার থাকে ৷ যেকোনওহার্টের অসুখ সারাতে সাহায্য করে এই ফল ৷ একইসঙ্গে কোলেস্টেরল কমাতে এর জুরি মেলাভার । তাই স্বাদে সাধারণ হলেও চাহিদা বাড়ছে ড্রাগন ফলের ৷ ইতিমধ্যেই রাজ্যেরবিভিন্ন বাজারে এই ফল পর্যাপ্ত পরিমানে পাওয়া গেলেও মেদিনীপুর জেলায় এতদিন সেভাবেদেখা যায়নি ফলের দুনিয়ায় অন্যতম সেরা এই ফলকে ৷ কিন্তু বর্তমানে মেদিনীপুরেরবাজারেও এই ড্রাগন ফলের রমরমা দেখা যাচ্ছে ৷

কোরোনারদাপটে কাবু বিশ্ব ৷ এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিষেধক পাওয়া যায়নি এই মারণ রোগের ৷বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই রোগের সঙ্গে মোকাবিলা করতে একমাত্র ভরসা শরীরের রোগপ্রতিরোধক্ষমতা ৷ আর চিরকিৎসকদের মতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এই ড্রাগনফলের জুড়ি মেলা ভার ৷

কিন্তুকী এই ড্রাগন ফল ৷ অত্যন্ত উপকারি এই ফলের নামকরণ হয়েছে এর রূপের জন্য ৷ সারাশরীরে আঁশযুক্ত ডিম্বাকৃতির এই ফল অনেকটা রূপকথার ড্রাগনের মতো দেখতে ৷ সাধারণতচার রকমের হয় এই ফলটি ৷ তিনটি প্রজাতির ফলের ত্বকের রং গোলাপি ৷ ও একটি প্রজাতিরত্বকের রং হলুদ ৷ প্রথম তিন প্রজাতির ফলের শাঁসের রঙও ভিন্ন ৷ একটির রং সাদা,একটি লাল ও অন্যটি বেগুনি ৷ হলুদ রংপ্রজাতির ফলের শাঁসের রং সাদা ৷

দেখতেবা খেতে সাধারণ মানের হলেও এর উপকারিতা প্রচুর ৷ অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর এই ফল৷ ক্যালোরি কম করতে এর জুড়ি মেলা ভার ৷ এর মধ্যে ভরপুর থাকে ভিটামিন ও মিনারেল ৷এই ফল ক্যানসারের আশঙ্কাকেও অনেকাংশে কম করে ৷ এর মধ্যে থাকা প্রচুর পরিমানেভিটামিনCদীর্ঘদিনেরবিভিন্ন রোগ সারাতে ও শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে ৷ এইফলের মধ্যে ফাইবারের পরিমানও যথেষ্ট ৷ সাধারণত শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণেও এই ফলগুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ৷

বর্তমানেএই ড্রাগন ফলেই মজেছে গোটা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মানুষ । পশ্চিম মেদিনীপুরেরগড়বেতা,ঘাটাল,খড়গপুর,কেশিয়াড়ি ফলের বাজার এখন এই ফলেররমরমা ৷ ড্রাগন ফলের দাম500-600টাকাপ্রতি কেজি । কখনও কখনও সিজন হিসাবে দাম কমে বা বাড়ে । এই ফলের নির্দিষ্ট ক্রেতাওরয়েছেন ।

এইড্রাগন ফল নিয়ে অনেকের অনেক অভিমত রয়েছে । কারও কারও মতে এই ড্রাগন ফল খেলেশরীরের নানা জটিল অসুখ সেরে যায় । বিশেষ করে সুগার,ডায়াবেটিস,ক্যানসারের মত যাবতীয় পীড়া থেকেমুক্তি ঘটে । এই ড্রাগন ফলে খাওয়ার ফলে শরীরে ইমিউনিটি বাড়ায় । এই রকমই বিভিন্নঅভিমত নিয়ে ড্রাগন ফল কেনা বেচা চলে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় । যদিও বর্তমানেড্রাগন ফলের চাষও করা হচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পিংলাতে ৷

এইড্রাগন ফল কিনতে আসা দীপঙ্কর দে বলেন, ‘‘আমরা ড্রাগন ফলের গুণ তো জানি না ।তবে অন্যান্য ফলের মতো এই ফল যেভাবে নজর কাড়ছে তাই নিয়ে গিয়ে দেখব,এর স্বাদ কেমন?শুনেছি খুব ভালো খেতে এবং এই ফল খেলেনাকি শরীরের খুব উপকার হয় ।’’আর একজন ক্রেতা সুবীর মাঝি বলেন, ‘‘ড্রাগন ফল শরীরের পক্ষে খুব উপকারী ৷এমনই শুনেছি ইউটিউব চ্যানেলে । তাই এই ফল কিনতে আসেছি ৷’’

একড্রাগন ফল বিক্রেতা পলাশ রায় বলেন, ‘‘ড্রাগন ফল সিজনের ফল ৷ মাত্র কয়েকমাসইপাওয়া যায় । এরপর আর পাওয়া যায় না । আমরা অল্প পরিমাণে দোকানে তুলেছি ।বর্তমানে এই ফলের চাহিদা প্রচুর । তাই ভবিষ্যতে আরও বেশি করে এই ফল দোকানে নিয়েআসব ৷’’তারমতে ফলের দাম বেশি হলেও তা কিনতে পিছপা হন না ক্রেতারা ৷

যদিওএ বিষয়ে মেদিনীপুরের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ গিরি বলেন, ‘‘এই ড্রাগন ফল জেলায় ধীরে ধীরেজনপ্রিয় হয়ে উঠছে ৷ বর্তমানে আম,লিচু,কলার মত ড্রাগন ফলের চাহিদাও বাড়ছেজেলায় । আমরা যদিও ড্রাগন ফল চাষ করার জন্য চেষ্টা করছি । প্রথমদিকেপরীক্ষামূলকভাবে গড়বেতার পিংলায় এই ফলের চাষ শুরু হয়েছে । তবে জেলায় আরও বেশি করেচাষ করার কথা ভাবা হচ্ছে ৷’’

ড্রাগনফলের উপকারিতা নিয়ে বিশিষ্ট প্রসূতি চিকিৎসক কাঞ্চন ধাড়া বলেন, ‘‘এই ড্রাগন ফল সত্যিই শরীরের পক্ষেউপকারী । বিশেষ করে প্রসূতি রোগীদের ক্ষেত্রে ড্রাগন ফল খুব উপকারি । শরীরেরনানাবিধ জটিল রোগ এবং শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ড্রাগন ফল অতুলনীয় ।অন্যান্য ফলের মতো এই ফলের যথেষ্ট গুণাগুণ রয়েছে । যার জন্য জেলায় এত চাহিদা ।’’

ABOUT THE AUTHOR

...view details