চন্দ্রকোনা, 1 জানুয়ারি: ডাইনি অপবাদে দুই বছর এক ঘরে পরিবার ৷ সামাজিকভাবে বয়কট করা হয়েছে তাঁকে। পঞ্চাশ হাজার টাকা না-দিলে সমস্যার সমাধান করা হবে না-বলে জানিয়েছেন গ্রামের মোড়লরা। সমস্যা সমাধানের কথা পুলিশ থেকে শুরু করে স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েও কাজের কাজ কিছুই হয়নি বলে অভিযোগ। ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনার ৷
জানা যায়, দুই বছর আগে গ্রামের এক নাবালক ও এক ব্যক্তির মৃত্যু হয় শারীরিক অসুস্থতার কারণে। তারপর থেকেই গ্রামের বেশকিছু মানুষজন ওই গ্রামেরই এক আদিবাসী মহিলাকে ডাইনি অপবাদ দেয়। তারপর থেকেই ওই মহিলাকে বিভিন্নভাবে অপবাদ দিতে থাকে স্থানীয়রা। এমনকী ওই গ্রামের বেশকিছু মোড়ল নিদান দেয় পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে তারপরে সমস্যার সমাধান নিয়ে মীমাংসায় বসবেন তাঁরা। কিন্তু পঞ্চাশ হাজার টাকা না-দেওয়ার কারণে সমস্যার সমাধানও হয়নি।
প্রায় দুই বছর ধরে সামাজিকভাবে বয়কট হয়ে রয়েছে আদিবাসী ওই পরিবার। তারপর থেকেই মাঝেমধ্যে চলে মানসিক অত্যাচার, বাড়ি ভাঙচুরও করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওই মহিলার ৷ অভিযোগ তাঁর স্বামী অসুস্থ ৷ তাঁকে রেখে আসতে হয়েছে আত্মীয়ের বাড়িতে। ছেলে, মেয়েরাও লেখাপড়া করে।গ্রামের এই পরিস্থিতির জন্য অধিকাংশ দিন তারা আত্মীয়ের বাড়িতে থাকে। ওই মহিলার আবেদন, তিনি ডাইনি নন ৷ সকলের সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে চান তিনি ৷ এই নিয়ে ওই মহিলা পুলিশ থেকে শুরু করে স্থানীয় প্রশাসনকেও বিষয়টি জানিয়েছেন ৷
অপরদিকে চন্দ্রকোনা 2 নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অলোক ঘোষ জানান, এখনও এসব নিয়ে কুসংস্কার রয়ে গিয়েছে কিছু জায়গায়। এনিয়ে আগেও প্রশাসনের তরফে সচেতনতামূলক প্রচার করা হয়েছে। গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি দেখা হবে এবং এনিয়ে সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হবে ।" বছর শেষ আরও একটি নতুন বছর শুরু হয়েছে, কিন্তু ডাইনি অপবাদ দিয়ে নির্যাতনের ঘটনার অবসান কবে হবে তার উত্তর অজানা।
আরও পড়ুন:
- মহিলাকে পুড়িয়ে মারার একদিনের মাথায় ফের তেজপুরেই ডাইনি অপবাদ! এবার বৃদ্ধ দম্পতিকে গ্রামছাড়া করার অভিযোগ
- মধ্যযুগীয় বর্বরতা! ডাইনি অপবাদে সন্তানের সামনেই পুড়িয়ে মারা হল মহিলাকে
- ডাইনি তকমা দিয়ে মহিলাদের উপর অত্যাচার, প্রতিবাদে সরব আদিবাসীরা