মেদিনীপুর, 30 অক্টোবর : ছেলে হয়েছে না মেয়ে, তা জানতে গেলে লাগছে 500 টাকা ৷ রোগীকে স্ট্রেচারে তুলে ওটিতে নিয়ে যেতে দিতে হচ্ছে 300 টাকা ৷ এরপর স্যালাইন চালানো থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজ তো রয়েছেই ৷ প্রতিটি কাজের ক্ষেত্রেই দিতে হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা ৷ না কোনও বেসরকারি নার্সিং হোম নয়, এই চিত্র মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মাতৃমা বিভাগের ৷ এভাবেই দফায় দফায় রোগীর পরিবারের থেকে টাকা চাইছেন রোগীদের দেখভালের দায়িত্বে থাকা আয়ারা ৷ টাকা না দিলে কখনও বাচ্চা মরে যাবে বলে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন, তো কখনও ডাক্তার ছুটি দেওয়ার পরেও রোগীর পরিচয়পত্র অর্থাৎ আধার কার্ড ও শিশুর টিকাকরণের কার্ড আটকে রাখছেন তাঁরা ৷
রোগীর যাতে কোনওরকম অযত্ন না হয় তাই বাধ্য হয়েই আয়াদের মোটা অঙ্কের দাবি মেটাতে বাধ্য হচ্ছেন পরিবারের লোকজন ৷ কখনও কখনও প্রসূতি মায়ের ও বাচ্চার কথা ভেবে সঙ্গে থাকা গয়নাগাটিও বিক্রি করে টাকা তুলে দিচ্ছেন আয়াদের হাতে ৷ বেশ কয়েকদিন ধরে হাসপাতাল সুপারের কাছে এই বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েও লাভ না হওয়ায় শুক্রবার রাতে হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ দেখান রোগীর আত্মীয়রা ৷
আরও পড়ুন :Fraud Case: মেদিনীপুর পোস্ট অফিসে দালাল চক্র চালানোর অভিযোগে ধৃত 1
গর্ভবতী স্ত্রীকে ভর্তি করিয়েছিলেন দিন তিনেক আগে ৷ ছেলে হওয়ার পর থেকে আয়াদের দাবি মেটাতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছেন বাচ্চার বাবা মনোজ চোংদার ৷ তাঁর কথায়, "রাত আড়াইটে নাগাদ সিজার হওয়ার পর সাড়ে তিনটের সময় আয়া এসে বলে বাচ্চা হয়েছে ৷ কিন্তু ছেলে না মেয়ে তা জানতে গেলে 500 টাকা লাগবে ৷ তাই দিয়েছি ৷ বাচ্চা হওয়ার পর ওটি থেকে স্ট্রেচারে করে বেডে দেবে, তাতেও টাকা চাইছে ৷ আমার বৃদ্ধা মা তিনতলা থেকে নেমে এসেছেন আমার কাছে টাকা চাইতে, নাহলে বাচ্চা ও তার মাকে বেডে দেবে না ৷ বাচ্চা তখন ঠকঠক করে কাঁপছে ঠান্ডায় ৷ তাতেও ওরা টাকা ছাড়া কাজ করবে না ৷ এইভাবে প্রতিটা কাজের জন্য টাকা চাইছে ৷ হাসপাতাল সুপারকে জানালে তাঁরা বলছেন লিখিত অভিযোগ জমা দিতে ৷ কিন্তু অসুস্থ স্ত্রী ও সন্তান এখনও ভর্তি হাসপাতালে, আয়ারা যদি তাদের কোনও ক্ষতি করে দেয় তাহলে তার দায় কে নেবে ?"