ভাদুতলা, 25 এপ্রিল : ওরা কথা বলতে পারে না ৷ মনের ভাব প্রকাশ করতে পারে না ৷ কিন্তু ওদেরও তো প্রাণ আছে ৷ জীব বৈচিত্র্যময় পৃথিবীতে পশু-পাখিদের কথা কতজনই বা ভাবে ৷ জল না পেলে, খেতে না পেলে তাদেরও যে কষ্ট হয় ৷ তা নিয়ে ভাববার সময় আর কোথায় ? কিন্তু, এখনও অনেক মানুষ আছেন যাঁরা পশু পাখিদের কথা ভাবেন ৷ কথা হচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ভাদুতলা বনবিভাগের রেঞ্জ অফিসার পাপন মহান্তির ৷ তিনি তাঁর বিভাগের মধ্যেই তৃষ্ণার্ত পাখিদের জন্য জলছত্র গড়ে তুলেছেন ৷ গ্রীষ্মকালে যাতে পাখিরা জল না পেয়ে মারা না যায়, তার জন্য এই উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি ৷
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ভাদুতলা বনবিভাগ ৷ আর সাধারণ বনবিভাগের মতো নয় ৷ ভিতরে গেলেই দেখা যাবে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি খড়ের চালা ঘর ৷ তার মধ্যে ছোট ছোট মাটির ভাঁড় ৷ রয়েছে জল ৷ শস্যদানা ৷ পাখিদের আনাগোনাও কম নয় ৷ রঙিন করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে পুরো বিভাগ ৷ উদ্যোক্তা ভাদুতলা বনবিভাগের রেঞ্জ অফিসার পাপন মহান্তি ৷ তিনি দীর্ঘদিন পিড়াকাটা বনবিভাগের দায়িত্ব পালন করেছেন । সেখানেও তিনি ফেলে দেওয়া অব্যবহৃত জলের বোতল দিয়ে ওই বিভাগ চারাগাছে ভরিয়ে তুলেছিলেন । সেইসময়ও খবরের শিরোনামে এসেছিলেন তিনি ৷ এরপর কেটেছে বছরখানেক । এরই মধ্যে তিনি বদলি হয়ে এসেছেন ভাদুতলা রেঞ্জ অফিসে । এখানে এসেও চুপ করে বসে থাকেননি । শুরু করেন পাখিদের জন্য ভাবনা চিন্তা । বনের পাখিদের তৃষ্ণা ও ক্ষুধা নিবারণের জন্য রাতারাতি তৈরি করে ফেলেছেন জলছত্র ৷ কীভাবে তাঁর মাথায় এই ভাবনা এল ?
তিনি খতিয়ে দেখেন, গরমের সময় বনের পাখিরা তীব্র জল কষ্টে ভোগে । কারণ জলাশয়গুলো শুকিয়ে যায় ৷ জল পায় না ৷ তাছাড়া, বিভিন্ন শিকারীদের ভয় রয়েছে । জলের কষ্টে অনেক পাখি মারাও যায় । তাই এইসব পাখিদের জন্য জলছত্র গড়ে তোলা হয়েছে ৷ গোটা অফিস এলাকা রঙিন করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে ৷ তিনি তার বিভাগের পাশাপাশি এলাকার বিভিন্ন জায়গায় মাটির ভাঁড়ে করে পাখিদের জন্য জল রেখেছেন ৷ তার পাশেই রেখেছেন গম, চাল সহ বিভিন্ন দানাশস্য । নানা জাতের নানা ধরনের পাখি এখানে আসে ৷ তেষ্টা নিবারণ করে । আর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন দপ্তরের কর্মী সহ এলাকার মানুষেরা।