সবং, 18 অক্টোবর: প্রাথমিক স্কুলে পড়ার বয়সে পুজোর কেনা নতুন জামা কাউকে দিয়ে দিতে বললে প্রথমে রাগ হওয়াই স্বাভাবিক ৷ দেওয়া তো দূর অস্ত ! ভাবনাতেই আসে না ৷ তবে এই বাস্তব কাহিনি একটু অন্যরকম ৷ মঙ্গলবার দরিদ্র সহপাঠীদের প্রতি মানবিকতা দেখাল সবং দশগ্রাম গিরিশচন্দ্র নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা । খুশি হলেন অভিভাবক-অভিভাবিকা থেকে শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষিকারা ।
গল্পটা মূলত শুরু হয়েছিল স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের কথোপকথনে । পড়ার ফাঁকে ক্লাসের শিক্ষকরা জিজ্ঞেস করেছিলেন এবার পুজোই কার ক'টা জামা হয়েছে । অবস্থাপন্ন পরিবারের পড়ুয়ারা জানিয়েছিল, পুজোয় তাদের কারও তিনটে কারও চারটে নতুন জামা হয়েছে ।
অন্যদিকে, এই ক্লাসেরই কম অবস্থাপন্ন বা দুঃস্থ পরিবার থেকে আসা পড়ুয়ারা জানায় তাদের এবারে নতুন জামা হয়নি। বাবা-মা কিনে দিতে পারেনি । এই কথোপকথনের মধ্যেই শিক্ষকরা পড়ুয়াদের জিজ্ঞেস করে তোমরা কি তোমাদের নতুন জামা থেকে এক সেট বন্ধুকে দিতে পারবে? এক কথাতেই রাজি হয়ে যায় সঙ্গী অন্য পড়ুয়ারা। শুরু হয় একে অপরকে নতুন জামা দেওয়া নেওয়ার পর্ব। প্রথম শ্রেণির অস্মিতা কর তার তিনটে জামা থেকে একটি জামা তুলে দেয় বন্ধু সুকদেব সামন্তকে । অন্যদিকে দেবারতি উত্থাসিনি তার জামা দিয়েছে তার বন্ধু সুমাইয়া খাতুনকে । একইভাবে দ্বিতীয় শ্রেণির শ্রীতমা জামা দিল তার বন্ধু বর্ষাকে, তৃতীয় শ্রেণির বিপাশা দিল প্রিয়াঙ্কাকে, চতুর্থ শ্রেণির রাইমা দিল মেঘাকে আর পঞ্চম শ্রেণির অঙ্কন দাস দিল তার তিন বন্ধু তনুকা, শান্তুনু ও বিকাশকে । এভাবেই পরস্পর পরস্পরকে জামা দিয়ে নতুন পুজোর আনন্দ মেতে ওঠার শুভেচ্ছা বার্তাও জানালো । এদিন প্রায় বিদ্যালয়ে 32 জন পড়ুয়া একে অপরকে জামাপ্যান্ট দেওয়ায় প্রায় 74 জন পুজোর নতুন জামা পেল । আর তাতেই খুশি বাকি পড়ুয়া-সহ স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা এবং স্থানীয় মানুষজন ।