মেদিনীপুরের এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থা মেদিনীপুর, 23 মার্চ: ফের প্রাথমিক স্কুলের বেহাল দশার ছবি উঠে এল ৷ ঘটনাস্থল মেদিনীপুর শহরের সেকপুরা বস্তি প্রাথমিক স্কুল ৷ এক সময় এখানে ইনফ্যান্ট থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী পড়াশোনা করত ৷ সেখানে এখন পড়ুয়ার সংখ্যা সর্বসাকুল্যে 12 জন ৷ যদিও ক্লাসে গিয়ে দেখা গেল মাত্র চারজন উপস্থিত । শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন পাঁচজন (Five Teachers and Twelve Students in Medinipur School)৷
প্রধান শিক্ষিকা মণীষা সন্নিগ্রাহীকে জিজ্ঞেস করতেই তাঁর উত্তর,"এই এলাকাটিতে মূলত খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বাস ৷ অদূরে একটি নির্মল হৃদয় মিশনারি স্কুল রয়েছে ৷ সেখানে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী পড়ুয়াদের জন্য অনেক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে ৷ তাই বেশিরভাগ ছাত্র-ছাত্রীই ওখানে ভর্তি হয়েছে ৷ আর 12 জনের মধ্য়ে 9-10 জন রোজই স্কুলে আসে ৷ কিন্তু আজ এলাকায় একটি বাড়িতে অন্নপ্রাশনের অনুষ্ঠান রয়েছে তাই মাত্র চারজন এসেছে ৷"
এতো গেল পড়ুয়া ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনুপাতের কথা ৷ এবার আসা যাক স্কুলের পরিবেশের কথায় ৷ তাতেও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাব স্পষ্ট ৷ স্কুলের সামনেই জামাকাপড় মেলেছেন স্থানীয়রা ৷ রীতিমতো এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত পর্যন্ত দড়ি টাঙিয়ে তাতে মেলা হয়েছে জামাকাপড় ৷ যত্রতত্র ঝুলছে সেই সব জামাকাপড় ৷ ক্লাসরুমগুলিতে ভালো করে আলো ঢোকে না ৷ এতেই দু-চারজন পড়ুয়াকে নিয়ে চলছে ক্লাস ৷ তাতেই এই সরকারি স্কুলের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই উঠেছে একাধিক প্রশ্ন ।
এই বিষয়ে প্রধান শিক্ষিকার বক্তব্য,"ওদের বারণ করলেও শোনে না ৷ বেশি কিছু বলতে গেলে তো আমাদের সঙ্গে ঝগড়া করে ৷ আর আমরা তো পড়াতেই চাই, কিন্তু পড়ুয়াদের সংখ্যা কমে গেলে আমরা কী করতে পারি ৷ আমাদেরও ভালো লাগে না ৷" এই নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা বুলু রানা ও বুলবুলি বিশ্বাসদের জিজ্ঞাসা করা হলে তাঁরা বলেন,"জানি এটা স্কুল ৷ এখানে জামাকাপড় মেলা ঠিক নয় ৷ তবুও আমরা নিরুপায় ৷ আমাদের একটামাত্র ঘরে ভিজে জামাকাপড় কোথায় দেব ? তাই আমরা বাধ্য হয়ে এই স্কুলের গায়েই মেলি ৷"
আরও পড়ুন : 1 বছর ধরে জলমগ্ন স্কুল, শৌচকর্মে বাড়িই ভরসা শিক্ষক-পড়ুয়াদের