মহিষাদল, 11 জানুয়ারি : স্বাস্থ্যসাথী কার্ডই নেই ৷ অথচ এসএমএস ঢুকল টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে । যা দেখে রীতিমত অবাক পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের বাসিন্দা শঙ্কর মান্না ৷ আর এই নিয়ে ফের স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে জালিয়াতির অভিযোগে সরব পদ্মশিবির (Corruption in Swastha Sathi Card) । জানা গিয়েছে, গত কয়েকদিনের মধ্যে কোনও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হননি শঙ্করবাবু ৷ অথচ তমলুকের একটি নার্সিংহোমের তরফে ওঁর নামেই তৈরি হল বিল এবং টাকা কাটার এসএমএসও এল তাঁর কাছে । আর তার থেকেও বড় আশ্চর্যের বিষয় হল কোনও স্বাস্থ্যসাথী কার্ডই নেই শঙ্করবাবুর ৷ বাড়ি মহিষাদলে হলেও কর্মসূত্রে তিনি থাকেন হলদিয়ার দ্বাড়িবেড়িয়াতে ৷
শঙ্কর মান্না জানান, তিনি এ যাবৎ স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য কোনও আবেদন জমা দেননি এবং তাঁর কোনও কার্ডও নেই ৷ তবুও গত 3 জানুয়ারি তাঁর মোবাইলে একটি এসএমএস আসে যে তিনি প্যারাডাইস ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামক একটি নার্সিংহোমে ভর্তি রয়েছেন । এই ঘটনাকে বিশেষ গ্রাহ্য করেননি তিনি ৷ কিন্তু 5 তারিখে তাঁর ফোনে একটি এসএমএস আসে, যেখানে দেখা যায় তাঁকে নার্সিংহোম থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এবং তাঁর স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থেকে কেটে নেওয়া হয়েছে 37,800 টাকা ।
এই ঘটনায় হতবাক মান্না দম্পতি যান মহিষাদল থানায় ৷ কিন্তু অভিযোগ করতে গেলেও তাঁর অভিযোগ নেওয়া হয়নি বলে জানান শঙ্করবাবু । এরপর বিডিও অফিসেও একটি অভিযোগ দায়ের করেন তিনি (person files a complaint of swastha sathi card corruption) । অভিযোগকারীর স্ত্রী রুমা মাইতি মান্নার প্রশ্ন, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য তাঁরা কোনও দরখাস্ত জমা দেননি তবুও কিভাবে কার্ড ইস্যু হল এবং কিভাবে তাঁর স্বামীর কোনও কিছু না হওয়া সত্ত্বেও টাকা কাটা হল ৷
আরও পড়ুন : পাট্টা বিলিতে চলছে দালালরাজ, আধিকারিকদের বিরুদ্ধে সরব তৃণমূল বিধায়ক
এ বিষয়ে বিজেপি-র তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "এই সরকার দুর্নীতিগ্রস্ত সরকার, এই সরকারের আমলে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থেকে শুরু করে যা হয়েছে সমস্ত জালিয়াতি ৷ ভুয়ো বিল এবং কাটমানি নেওয়া এই সরকারের বরাবরের অভ্যাস ।" যদিও নার্সিংহোমে ম্যানেজার রাজনারায়ণ গাঁতাইতের দাবি, এই ঘটনা আসলে দু‘জন একই নামধারী ব্যক্তির ৷ তিনি বলেন,"শঙ্কর মান্না ভর্তি হয়েছিলেন, তাঁর বৈধভাবে প্রমাণপত্র আমাদের কাছে রয়েছে । আমাদের কোনও গাফিলতি নেই । হয়তো ভুলবশত ওঁর নম্বরে এই এসএমএস গিয়েছে । যাঁর ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও কার্ড মিলেছে এবং তাঁরই অস্ত্রোপচার হয়েছে ।" এই ঘটনায় মহিষাদল ব্লকের বিডিও জগদীশচন্দ্র মণ্ডল বলেন, "এই ধরনের একটা অভিযোগ এসেছে ৷ আমরা সমগ্র ঘটনার তদন্তে নেমেছি । তদন্ত শেষ হলে বোঝা যাবে সঠিক কী ঘটেছে ৷"